নাটোরে নৌকার প্রার্থীর কর্মীকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ, মেয়রের বিরুদ্ধে মানববন্ধন

নাটোরের বড়াইগ্রামে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মীকে লাঞ্ছিতের প্রতিবাদে মানববন্ধন। শুক্রবার উপজেলার বনপাড়া বাজারেছবি: প্রথম আলো

নাটোর-৪ (বড়াইগ্রাম-গুরুদাসপুর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারীর এক কর্মীকে লাঞ্ছিতের অভিযোগ উঠেছে বনপাড়া পৌরসভার মেয়র কে এম জাকির হোসেনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পাশাপাশি আজ শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বনপাড়া বাজারে মানববন্ধন করেছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর সমর্থকেরা।

ভুক্তভোগী ব্যক্তির নাম ঈমান আলী। তিনি বনপাড়া পৌরসভার কাউন্সিলর এবং আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মী। অভিযুক্ত মেয়র কে এম জাকির হোসেন বনপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহানারা বেগমের ছেলে।

ঈমান আলীর অভিযোগ, মেয়র তাঁর মায়ের পক্ষে কাজ করতে বলেছিলেন। কিন্তু তিনি না করায় মেয়র তাঁকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং মারধরের হুমকি দেন। মেয়র জাকির তাঁর মায়ের পক্ষে কাজ করতে বলার কথা স্বীকার করলেও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন।

বনপাড়া পৌরসভার জনসাধারণের ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। এ সময় প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা আবদুস সোবাহান প্রামাণিক, বনপাড়া পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, পৌর যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেন সরকার, সম্পাদক নাহিদুল ইসলাম, কাউন্সিলর ঈমান আলী ও মুহিত কুমার বক্তব্য দেন।

মানববন্ধনে কাউন্সিলর ঈমান আলী বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থী জাহানারা বেগমের ছেলে ও পৌর মেয়র কে এম জাকির হোসেন আমাকে ডেকে নিয়ে তাঁর মায়ের পক্ষে নির্বাচনী কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতে বলেন। আমি নৌকা প্রতীকের বাইরে নির্বাচনী কাজ করতে না চাইলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং মারপিটের হুমকি দেন। আমাকে পৌরসভায় আসতেও নিষেধ করেন। আমি আমার জীবন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় আছি। আমি প্রশাসনের কাছে নিরাপত্তা চাই। আমি এ ব্যাপারে মেয়রের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’

মানববন্ধনে বক্তারা আরও বলেন, কাউন্সিলর ঈমান আলী আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করায় মেয়র জাকির বিভিন্ন ধরনের হুমকি দিচ্ছেন। সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়ায় একশ্রেণির লোক তাঁকে ও তাঁর সমর্থকদের মেনে নিতে পারছেন না। তাঁরা আওয়ামী লীগ করেন অথচ শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত মানেন না। তাঁরা এ ঘটনার বিচারের দাবি জানান।

অভিযোগের বিষয়ে মেয়র কে এম জাকির হোসেন বলেন, ‘আমি মেয়র হিসেবে কাউন্সিলর ঈমান আলীকে আমার মায়ের পক্ষে কাজ করার অনুরোধ করেছি মাত্র। কোনো হুমকি বা গালিগালাজ করা হয়নি। বরং নৌকার প্রার্থী প্রতিনিয়ত আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন এবং আমার মায়ের কর্মীদের আওয়ামী লীগ ছাড়া করার হুমকি দিচ্ছেন।’

আওয়ামী লীগের প্রার্থী সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী বলেন, ‘আমি যখন উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই, তখনো মেয়র জাকির হোসেন বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিদ্ধান্ত মানেন না। আমার এক কর্মীকে হুমকি দিয়েছেন। এ ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।’  

বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আজম জানান, ‘কাউন্সিলর ঈমান আলীর লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু রাসেল বলেন, আজ বিকেল পর্যন্ত তাঁর কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি মানববন্ধনের ঘটনাটি লোকমুখে শুনেছেন।’