কেউ কেউ ডিম নিয়ে খেলতে চায়, আমরাও খেলব: পরিকল্পনামন্ত্রী

সুনামগঞ্জে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসে পাঠদান কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে কথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। রোববার সকালে
ছবি: প্রথম আলো

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, ‘দেশে এত এত আলু উৎপাদন হয়। কেউ কেউ আলু নিয়ে খেলতে চেয়েছিল, আমরা আমদানি করেছি, আলুর দাম কমছে। এখন ডিম নিয়ে কেউ কেউ খেলতে চায়, আমরাও খেলব। আমাদের খেলা হবে আমদানি করা, নিয়ে আসা, দাম কমানো।’ আজ রোববার সকালে সুনামগঞ্জে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের স্থায়ী ক্যাম্পাসে পাঠদান কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

এম এ মান্নান বলেন, ‘একযোগে সারা দেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। ফলে নতুন করে ক্রেতা, নতুন ভোক্তা প্রচুর পরিমাণে বেড়ে গেছে। সেই পরিমাণে সাপ্লাইটা বাড়েনি। এ জন্য একটু সমস্যা হচ্ছে।’

মূল্যস্ফীতি সব দেশেই আছে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য নিম্ন আয়ের মানুষ। খেটে খাওয়া মানুষ। এ জন্য আমরা এক কোটি পরিবারকে রেশনে, ন্যায্যমূল্যে খাবার দিচ্ছি। ট্রাকে করে খাবার বিক্রি করছি। ফলে মূল্যস্ফীতির ছোবলটা নিচের দিকে থাকছে। আমরা এটাকে আরও কমাব।’ এর সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ‘ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে। আর ২০-২২ দিন, মূল্যস্ফীতি যেটা বেড়েছে, সেটা নামতে শুরু করবে। আমরা মূল্যস্ফীতি চাই না। তবে সবকিছু সরকারের নিয়ন্ত্রণে নেই। আমরা দুঃখিত। মানুষের কষ্টে আমরাও কষ্ট পাই।’

হরতাল-অবরোধে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হচ্ছে বলে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসবে, যারা রাজনীতির নামে নেতিবাচক কর্মসূচি দিয়ে নিজের পায়ে, দেশের পায়ে কুড়াল মারছে; তারা কচুরিপানার মতো ভেসে যাবে। নির্বাচন হবে। দেশের মানুষ নির্বাচন চায়। মানুষ সড়ক, সেতু, হাসপাতাল চায়। উন্নয়ন চায়।

এর আগে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের স্থানীয় ক্যাম্পাসে পৌঁছালে তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান শিক্ষার্থীরা। মেডিকেল কলেজটির অধ্যক্ষ মনোজিৎ মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আবু নঈম শেখ, বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের মহাপরিচালক আনোয়ার হোসেন চৌধুরী, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরী, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ এহসান শাহ, সুনামগঞ্জ পৌরসভার মেয়র নাদের বখত, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নোমান বখত, বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের প্রকল্প পরিচালক চিকিৎসক মো. শামস উদ্দিন, সুনামগঞ্জের সিভিল সার্জন আহম্মদ হোসেন প্রমুখ।

২০২১ সালের ১২ সেপ্টেম্বর সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অস্থায়ী ক্যাম্পাসে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজের পাঠদান শুরু হয়। এরই মধ্যে সদর উপজেলার মদনপুরে স্থায়ী ক্যাম্পাস ও ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের নির্মাণকাজ চলে। প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার প্রকল্পটি ২০১৮ সালের ৪ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন হয়। প্রকল্পের পরিচালক মো. শামস উদ্দিন বলেন, প্রকল্পের ৬৫ শতাংশ কাজ শেষ। এর মধ্যে মেডিকেল কলেজের একাডেমিক ভবনের কাজ শেষ হয়েছে ৯৫ শতাংশ। প্রকল্পের মেয়াদ আছে ২০২৫ সাল পর্যন্ত। তাঁর আশা, ২০২৪ সালের মধ্যেই কাজ শেষ হয়ে যাবে।

পরে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান মদনপুর-দিরাই সড়কের তিনটি নতুন সেতু নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এ ছাড়া শান্তিগঞ্জে বাংলাদেশ শিল্প কারিগরি সহায়তা কেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন, শান্তিগঞ্জ উপজেলায় সুনামগঞ্জ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, আজিজুন নেছা ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট, মুনসী আরফান আলী-ইউসেফ শ্রম ও কর্মসংস্থান ইনস্টিটিউটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন পরিকল্পনামন্ত্রী।