কুমিল্লায় সংঘর্ষে পুলিশ কনস্টেবলসহ নিহত ৩
কুমিল্লা শহরতলির কোটবাড়ী, দেবীদ্বার ও দাউদকান্দি উপজেলায় বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষে এক পুলিশ কনস্টেবলসহ তিনজন নিহত হয়েছেন।
আজ রোববার বেলা দেড়টার দিকে দেবীদ্বার আজগর আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। অপর দিকে কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ এলাকায় সংঘর্ষে এক কনস্টেবল নিহত হয়েছেন।
নিহত যুবকের নাম আবদুল রাজ্জাক রুবেল (২৬)। তিনি দেবীদ্বার পৌর এলাকার বারেরা গ্রামের মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। নিহত পুলিশ সদস্যের নাম এরশাদ মিয়া। তিনি দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ের পুলিশের সদস্য।
প্রত্যক্ষদর্শী ও বিক্ষোভকারীরা বলেন, দেবীদ্বার নিউমার্কেট স্বাধীনতা চত্বরে অবস্থা নেন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পাঁচ শতাধিক নেতা–কর্মী। স্বাধীনতা চত্বর থেকে কিছুটা দূরে আজগর আলী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান যুবক আবদুল রাজ্জাক। এ ছাড়া দফায় দফায় ক্ষমতাসীন দলের অস্ত্রধারী নেতা–কর্মীদের সঙ্গে পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইটপাটকেল ছোড়ার ঘটনা ঘটেছে। কয়েকটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আলী এহসান বলেন, আজ বেলা দেড়টার দিকে নিহত যুবকের লাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আনা হয়।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ের কুমিল্লা অঞ্চলের পুলিশ সুপার খায়রুল আলম বলেন, আন্দোলনকারীরা ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির পুরাতন ভবনে আগুন দেন। পরে ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানায় আগুন দেন তাঁরা। এর আগে পুলিশের একটি প্রাইভেটকার ও রেকারে আগুন দেওয়া হয়েছে। একপর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা পুলিশ কনসটেবল এরশাদ মিয়া পিটিয়ে হত্যা করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আন্দোলনকারীরা জানান, আজ সকাল থেকেই ইলিয়টগঞ্জ এলাকায় সংঘর্ষ চলছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ছয়টি মোটরসাইকেল।
কুমিল্লা শহরতলির কোটবাড়ীতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সময় এক তরুণকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। পরে তাঁকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ওই তরুণ নিহত হয়।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক সেখ ফজলে রাব্বী বলেন, আজ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিভিন্ন স্থানে আহত ৩২ জনকে ভর্তি করা হয়। তার মধ্যে ২৫ বছরের তরুণের অবস্থা গুরুতর ছিল। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। উদ্ধারকারীরা জানান, কোটবাড়ী বিশ্বরোডে পড়ে থাকতে দেখে তাঁকে উদ্ধার করেন। তার শরীরে ধারালো অস্ত্রের চিহ্ন আছে। তাঁর পরিচয় পাওয়া যায়নি। লাশ হাসপাতালে রাখা আছে।