নোয়াখালীতে যুবদল নেতাকে না পেয়ে বড় ভাই আ.লীগ নেতাকে আটক করল পুলিশ

মোশারফ হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে যুবদলের এক নেতাকে ধরতে এসে তাঁকে না পেয়ে তাঁর বড় ভাই আওয়ামী লীগের নেতা মোশারফ হোসেনকে (৪৮) আটক করেছে পুলিশ। আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে তাঁকে আটক করা হয়।

আটক মোশারফ হোসেন বসুরহাট পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তাঁর ছোট ভাই জাহেদ হোসেন ওরফে সাহেদ (২৮) উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। বর্তমানে তিনি যুবদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার নির্দেশে আওয়ামী লীগের ওই নেতাকে ধরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। যদিও পুলিশ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

কাদের মির্জা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই। এ ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা। তাঁদের মতে, এটি ক্ষমতার অপব্যবহার।

দলীয় ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে কাদের মির্জার নির্দেশে কোম্পানীগঞ্জ থানা–পুলিশের একটি দল ২ নম্বর ওয়ার্ডে যুবদল নেতা জাহেদ হোসেনের বাড়িতে অভিযান চালায়। পুলিশ তাঁকে বাড়িতে না পেয়ে থানায় ফিরে আসে। এতে ক্ষুব্ধ হন কাদের মির্জার। পরে তিনি পুলিশকে জাহেদের বড় ভাই সাবেক কাউন্সিলর মোশারফ হোসেনকে ধরে আনতে বলেন। সেই অনুযায়ী আজ দুপুর ১২টার দিকে পুলিশ মোশারফকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে আসে। সন্ধ্যা ছয়টায় এ প্রতিবেদন লেখার তিনি থানায় আটক ছিলেন।

কাদের মির্জার নির্দেশে আওয়ামী লীগের ওই নেতাকে আটক করা হয়নি বলে দাবি করেছেন কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রণব চৌধুরী। তিনি বলেন, তাঁকে বসিয়ে রাখা হয়েছে। কিছু বিষয় আছে, সে বিষয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে আবদুল কাদের মির্জা প্রথম আলোকে বলেন, মোশারফ আওয়ামী লীগের সঙ্গে নেই। তিনি গতকাল মিটিং করে মিছিল করিয়েছেন। সেটা প্রমাণিত হওয়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘সে (মোশারফ) আমাদের দল করে না। সে একরাম চৌধুরীর ক্যাডার। একরাম চৌধুরীর দল করে।’ ছোট ভাইকে পুলিশ ধরতে না পারায় বড় ভাইকে ধরে আনতে বলেছেন কি না, জানতে চাইলে উত্তেজিত হয়ে তিনি ফোন কেটে দেন।

সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ভাগনে ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব রশীদ ওরফে মঞ্জু প্রথম আলোকে বলেন, মোশারফ পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক। তাঁর ছোট ভাই বিএনপির রাজনীতি করেন। গতকাল রাতে নাকি তাঁদের বাড়িতে বিএনপির লোকজন সভা করেছেন। মেয়র (কাদের মির্জা) বিষয়টি শোনার পর তাঁকে (মোশারফ) ফোন দিলে তিনি অস্বীকার করেন। পরে তিনি (মেয়র) প্রমাণপত্র বের করে তাঁকে থানায় দেন।

মাহবুব রশীদ আরও বলেন, ‘আমরা বিষয়টি দেখছি, রাতের মধ্যে কী হয়। আমরাও অনুরোধ করেছি, তাঁকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য।’ ছোট ভাইকে না পেয়ে বড় ভাইকে আটক করার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমরাও ভালোভাবে দেখছি না। কারণ, মোশারফ নিজেও বিভিন্ন সময় ভাইকে নিবৃত করার চেষ্টা করেছেন, কিন্তু পারেননি।’