নরসিংদীর চরাঞ্চলে ভোরবেলা দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন টেঁটাবিদ্ধসহ আহত ৮

নরসিংদী সদর উপজেলার আলোকবালীতে দুপক্ষের সংঘর্ষে টেঁটাবিদ্ধ নাজমুল শিকদার (১৯)। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় নরসিংদী সদর হাসপাতালে
ছবি: প্রথম আলো

নরসিংদী সদর উপজেলার চরাঞ্চল আলোকবালীতে দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজন টেঁটাবিদ্ধসহ অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে আলোকবালী ইউনিয়নের খোদাদিলা এলাকায় এই সংঘর্ষ শুরু হয়। খবর পেয়ে নরসিংদী মডেল থানার পুলিশ সকাল সাড়ে ১০টায় ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আলোকবালী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হাসান আলী ও ইউনিয়ন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক জয়নাল আবেদীনের অনুসারীদের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে তাদের এই বিরোধ দীর্ঘদিনের।

সংঘর্ষে আহত আট জন হলেন নাজমুল শিকদার (১৯), মো. হালিম মিয়া (৫০), হারুন মিয়া (২০), মাসুদ রানা (২৪), আল আমিন (৩০), শফিউল্লাহ (৩৫), নাহিদ সরকার (২২) ও সাকিব সরকার (২৪)। শরীরের চার জায়গায় টেঁটাবিদ্ধ হয়ে নরসিংদী সদর হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিচ্ছেন নাজমুল শিকদার। তাঁর বাড়ি রায়পুরা উপজেলার নিলক্ষায়। এ ছাড়া আহত অপর সাত জনের বাড়ি খোদাদিলা গ্রামে। তাঁরা শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে আহত ব্যক্তিরা কে কোন পক্ষের, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।

দুপক্ষের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গতকাল বুধবার দুপুরে নরসিংদী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘শান্তি ও উন্নয়ন’ সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন স্থানীয় কয়েকজন তরুণ-যুবক। এ নিয়ে গতকাল রাত আটটার দিকে খোদাদিলা গ্রামে দুপক্ষের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বাক্‌বিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর জেরে আজ ভোরে দুপক্ষই টেঁটা ও দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় টেঁটাসহ দেশি অস্ত্রের আঘাতে আহত হন অন্তত আটজন।

সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক রেজওয়ানা জেবিন জানান, টেঁটাবিদ্ধ নাজমুলকে পুলিশই হাসপাতালে নিয়ে আসে। তাঁর শরীরের তিন জায়গা থেকে টেঁটা অপসারণ করা হয়েছে। আরেক জায়গায় টেঁটার আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাঁকে পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

সংঘর্ষের বিষয়ের বক্তব্য জানতে দুপক্ষের নেতৃত্ব দেওয়া হাসান আলী ও জয়নাল আবেদীনের ব্যবহৃত মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁরা ফোন ধরেননি। মুঠোফোনে এসএমএস পাঠিয়েও সাড়া পাওয়া যায়নি।

জানতে চাইলে নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম ভূঁইয়া বলেন, এই সংঘর্ষের ঘটনায় ঠিক কতজন আহত হয়েছেন, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রণে। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।