রংপুর মেডিকেলে বুক-পেট জোড়া লাগানো দুই কন্যাশিশুর জন্ম, টাকার অভাবে হচ্ছে না উন্নত চিকিৎসা
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বুক ও পেট জোড়া লাগানো যমজ দুই কন্যাশিশুর জন্ম দিয়েছেন এক নারী। গত শনিবার দুপুরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জোড়া লাগা দুই শিশুর জন্ম হয়। তবে টাকার অভাবে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকায় নিতে পারছে না দরিদ্র পরিবারটি।
ওই নারীর নাম লাবণী আক্তার (২২)। তিনি লালমনিরহাট সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ইউনিয়নের সাতপাটকি গ্রামের আরিফুল ইসলামের স্ত্রী। লাবণী আক্তার বলেন, ‘আমি আমার সন্তানদের সুচিকিৎসা চাই। আমাদের আর্থিক সক্ষমতা নেই। সরকারি সহায়তায় চিকিৎসার আবেদন জানাই।’
আজ সোমবার দুপুরে লাবণীর বাবা লাবলু মিয়া বলেন, প্রায় ছয় বছর আগে তাঁর মেয়ের বিয়ে হয় আরিফুলের সঙ্গে। আরিফুল পেশায় রাজমিস্ত্রি। তাঁদের পাঁচ বছর বয়সী এক ছেলেসন্তান রয়েছে। আলট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে যমজ দুই শিশুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ২ অক্টোবর তাঁর মেয়েকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর শনিবার দুপুরে গাইনি বিভাগের চিকিৎসক সারমিন সুলতানা অস্ত্রোপচার করেন। এতে বুক ও পেট জোড়া লাগানো যমজ দুই কন্যাশিশুর জন্ম হয়।
লাবলু মিয়া আরও বলেন, তিনি নিজেও দিনমজুর। মেয়ের স্বামীর আর্থিক অবস্থাও ভালো নয়। চিকিৎসক বাচ্চাদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু আর্থিক সক্ষমতা না থাকায় তা সম্ভব হয়নি। এ অবস্থায় সরকারি সহযোগিতা কামনা করছেন।
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসূতি বিভাগের প্রধান সারমিন সুলতানা বলেন, প্রসূতি লাবণী আক্তারের আগের সন্তান সিজারের মাধ্যমে হয়েছে। এবার অস্ত্রোপচার সফল হলেও জোড়া লাগা দুই কন্যাশিশুর হার্ট ও লিভার একটা থাকায় এখানে চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব নয়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের ঢাকায় পাঠানো প্রয়োজন। এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালককে জানানো হয়েছে।
হাসপাতালটির শিশু বিভাগের চিকিৎসক আ ন ম তানভীর চৌধুরী বলেন, প্রাথমিকভাবে যমজ দুই শিশুর বুক ও পেট একসঙ্গে জোড়া লাগানো বলে মনে হচ্ছে। তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেই। দুই নবজাতকের শ্বাসকষ্ট আছে। এ জন্য তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অথবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার জন্য পরিবারকে বলা হয়েছে। কিন্তু এই মুহূর্তে ঢাকা নিয়ে যাওয়ার মতো পরিবারটির আর্থিক অবস্থা নেই। তাই মানবিক দিক বিবেচনা করে দুই নবজাতককে শিশু ওয়ার্ডের শেখ রাসেল স্পেশাল নিউবর্ন ইউনিট (স্ক্যানু) বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।