লোহাগড়ায় তিন বছরের শিশু হত্যা মামলায় সৎমা গ্রেপ্তার

গ্রেপ্তারপ্রতীকী ছবি

নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় তিন বছরের কন্যাশিশুকে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় সৎমাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার লোহাগড়া থানায় মামলাটি করেন শিশুটির দাদা আবুল খায়ের কাজী। এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গিলাতলা গ্রামে বসতবাড়ি থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে লোহাগড়া থানা-পুলিশ।

নিহত নুসরাত গিলাতলা গ্রামের সজীব কাজীর মেয়ে। সজীব পেশায় নছিমন চালক। পুলিশ জানায়, ঘটনাস্থলে গিয়ে সন্দেহ হলে নুসরাতের সৎমা জোবাইদা বেগম (১৯) ও বাবা সজীব কাজীকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি তদন্ত করে এবং জোবাইদাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জোবাইদা পুলিশের কাছে মেয়েটিকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।

পরিবারের সদস্য ও প্রতিবেশীরা জানান, সজীব কাজীর প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদ হয়। পরে ২০২১ সালে ফুফাতো ভাই সজীব কাজীর সঙ্গে জোবাইদার বিয়ে হয়। জোবাইদার সন্তান নেই। প্রথম স্ত্রীর ইয়াসিন (৫) ও নুসরাত (৩) নামের দুই সন্তান। তারা দুজন সজীব কাজীর সংসারে থাকে। দাদা-দাদির স্নেহ ও ভালোবাসায় দুই সন্তানকে লালন-পালন করা হচ্ছিল।

অভিযুক্ত জোবাইদা পুলিশকে জানিয়েছেন, ইয়াসিন ও নুসরাত দুই ভাইবোনের মধ্যে প্রায় ঝগড়া ও হাতাহাতি হতো। মঙ্গলবার দুপুরেও ঝগড়া লাগে। ইয়াসিন ছোট বোন নুসরাতকে হাত দিয়ে আঘাত করে। নুসরাত কাঁদতে থাকে। কান্না থামাতে নুসরাতের নাক-মুখ চেপে ধরেন তিনি (জোবাইদা)। এতেই শ্বাস বন্ধ হয়ে নিস্তেজ হয়ে পড়ে নুসরাত। জোবাইদা আতঙ্কিত হয়ে তাকে বিছানায় কাঁথা দিয়ে ঢেকে রেখে ঘর থেকে বের হয়ে যান। পরে নুসরাতের দাদি পান্না বেগম তাকে খুঁজতে গিয়ে ঘরে নিথর দেহ পান। এ সময় দাদির চিৎকারে আশপাশের মানুষ জড়ো হয়ে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে শিশুটির লাশ পুলিশ হেফাজতে নেয়।

লোহাগড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের কাছে হত্যার কথা স্বীকার করার পর আদালতেও স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন জোবাইদা বেগম। আদালত বুধবার বিকেলে তাঁকে কারাগারে পাঠিয়েছেন।