চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন সদ্য শেষ হয়েছে। চারদিকে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে অসংখ্য প্রচারপত্র। আবাসিক হলে শিক্ষার্থীদের কক্ষেও জমা হয়েছে শতাধিক প্রচারপত্র ও প্রচার কার্ড। ছড়িয়ে থাকা এসব প্রচারপত্র জমা দিলেই মিলছে বিশেষ কলম। ব্যবহারের পর এ কলম থেকেই গাছ জন্মায় বলে একে পরিবেশবান্ধব কলমও বলা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন–পরবর্তী এমন আয়োজন করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন আওয়ার গ্রিন ক্যাম্পাস। গত বৃহস্পতি ও আজ রোববার দুপুর ১২টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বর, শহীদ মিনার, বন ও পরিবেশবিদ্যা ইনস্টিটিউটের সামনে এই কর্মসূচি হয়। দুই দিনের এ কর্মসূচিতে প্রায় ৩৭০ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে ১ হাজার ১০০টি কলম সংগ্রহ করেন।
আয়োজকেরা জানান, চাকসু নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থী গড়ে ১০ হাজারের বেশি প্রচারপত্র ব্যবহার করেছেন। এ নির্বাচনে মোট ৯০৮ জন প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। তাঁদের প্রায় সবাই প্রচারপত্র ব্যবহার করেছেন। এ কারণে তাঁরা এ ধরনের ব্যতিক্রম আয়োজন করছেন। পরিবেশবান্ধব কলমটি ব্যতিক্রম। এটি বানানো হয়েছে কাগজ দিয়ে। এর ভেতরে মরিচ, টমেটো, পুদিনা, পুঁইশাক, মিষ্টিকুমড়ার বীজ দেওয়া রয়েছে। এটি মাটিতে ফেললেই এসব গাছের চারা জন্মাবে।
জানতে চাইলে সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ও আইন বিভাগের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘চাকসু নির্বাচনের সময় অনেক শিক্ষার্থীর কক্ষে প্রচারপত্র জমেছিল। এসব প্রচারপত্র রাখার আগ্রহ অনেকের নেই। আমরা সেসব প্রচারপত্র সংগ্রহ করেছি। এর বিনিময়ে দিচ্ছি পরিবেশবান্ধব কলম। শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ দেখে মনে হচ্ছে, আমরা একটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারছি।’
আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, ‘কলম বিতরণ আমাদের মূল লক্ষ্য নয়। আমাদের উদ্দেশ্য শিক্ষার্থীদের মধ্যে পরিবেশসচেতনতা গড়ে তোলা। আমরা আশা করি, এই উদ্যোগের মাধ্যমে তাঁরা ভবিষ্যতে কাগজের অপব্যবহার থেকে বিরত থাকবেন।’
প্রচারপত্র জমা দিয়ে উচ্ছ্বাসিত শিক্ষার্থীরাও। বাংলা বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনের সময় ক্যাম্পাসজুড়ে প্রচারপত্রের ছড়াছড়ি ছিল। আওয়ার গ্রিন ক্যাম্পাস এখন সেগুলো সংগ্রহ করছে। আমার জমে থাকা প্রচারপত্রগুলো দিয়েছি। বিনিময়ে এমন কলম পেয়েছি, যা লেখা শেষে গাছ লাগাতে পারব—দারুণ উদ্যোগ।’
মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সাদীদ বলেন, ‘উদ্যোগটা খুবই প্রশংসনীয়। ক্যাম্পাস প্রচারপত্রে ভরে গিয়েছিল। এমন কার্যক্রমে অংশ নিতে পেরে ভালো লাগছে।’