কেন্দ্রীয় নেতাদের হস্তক্ষেপ চেয়ে দুই নেতার আবেদন 

গত সোমবার ডাকযোগে ওই আবেদন ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। গতকাল চিঠিটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

পাবনায় বিএনপির কমিটি গঠন নিয়ে আবারও জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব উপজেলা ও পৌর কমিটি গঠনে স্বেচ্ছাচারিতা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন আহ্বায়ক কমিটির দুই যুগ্ম আহ্বায়ক। তাঁরা এ বিষয়ে হস্তক্ষেপ চেয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের কাছে আবেদন করেছেন।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নূর মোহাম্মদ মাসুম। তিনিসহ আবেদনটিতে স্বাক্ষর করেছেন যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুস সামাদ খান। গত সোমবার ডাকযোগে ওই আবেদন ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। গতকাল ওই আবেদন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

আবেদনে বলা হয়েছে, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান ও সদস্যসচিব মাসুদ খন্দকার কমিটির অন্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা না করেই জেলার সুজানগর ও সাঁথিয়া উপজেলা এবং পৌর বিএনপির কমিটি করেছেন। তাঁরা কমিটি গঠনে স্বেচ্ছাচারিতা করেছেন। নবগঠিত এসব কমিটিতে দলের ত্যাগী নেতাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। যাঁরা ১০ থেকে ১২ বছর দলীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত নন, তাঁদের নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্য উপজেলাগুলোতে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রেও আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব কারও সঙ্গে আলোচনা করছেন না। ফলে উপজেলা পর্যায়ে তৃণমূল নেতা-কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।

জেলা বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০১২ সালের ২২ জানুয়ারি জেলা বিএনপির সবশেষ পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হয়। এর পর থেকে বাড়তে থাকে দলীয় কোন্দল। এ সময় তৈরি হয় ‘বিএনপি রক্ষা কমিটি’। ২০১৯ সালের ৩ জুলাই কেন্দ্রীয় বিএনপি পূর্ণাঙ্গ কমিটি ভেঙে ৪৮ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে। এ কমিটির দায়িত্ব ছিল ৯০ দিনের মধ্যে ৯টি উপজেলা ও ৯টি পৌরসভার ১৮টি নতুন কমিটি গঠন করা।

নেতা-কর্মীরা আরও বলেন, আহ্বায়ক কমিটি ৯০ দিনের বদলে প্রায় আড়াই বছর সময় পার করে। এ সময়ের মধ্যে তাঁরা মাত্র ৯টি কমিটি গঠন করে, যা নিয়েও চরম অসন্তোষ শুরু হয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে। ফলে গত ১৫ এপ্রিল জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ভেঙে ৬ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করে কেন্দ্রীয় বিএনপি। এর কয়েক মাস পর গত ২২ আগস্ট আবার ৬ সদস্যর কমিটি ভেঙে ৪২ সদস্যের নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। এ কমিটি নিয়েও বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এ বিষয়ে গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রথম আলো অনলাইনে ‘আবারও আহ্বায়ক কমিটি, একাংশের মধ্যে অসন্তোষ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়।

এ প্রসঙ্গে জানতে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মাসুদ খোন্দকার ফোন ধরেননি।

আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘হ্যাঁ, আমিও ফেসবুকে চিঠিটি দেখেছি। কোনো নেতার অভিযোগ থাকলে তাঁরা আমাদের বলতে পারতেন। এভাবে ফেসবুকে দিতে পারেন না। এটা দিয়ে তাঁরা অন্যায় করেছেন। গঠনতন্ত্রবিরোধী কাজ করেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘সাধারণত কমিটিতে কারা থাকবেন, তা আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব ঠিক করেন। এরপরও আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করে কমিটি দিয়েছি। তাঁরা যে অভিযোগ তুলেছেন, এটা সঠিক নয়।’