ফরিদপুরে প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে একজনের মৃত্যুদণ্ড, আসামির সম্পত্তি বিক্রি করে জরিমানা পরিশোধের নির্দেশ
ফরিদপুরে ১৩ বছর বয়সী শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের দায়ে এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) শামীমা পারভীন এ আদেশ দেন।
একই সঙ্গে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তিকে পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করেন আদালত। আসামির জমিজমা বিক্রি করে জরিমানার অর্থ ভুক্তভোগী কিশোরীকে দেওয়ার জন্য জেলা কালেক্টরকে নির্দেশ দেন আদালত।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ওই ব্যক্তির নাম নূরুদ্দীন মোল্লা (৫৭)। তিনি ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের কোষাগোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা। রায় প্রদানের সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর তাঁকে পুলিশি প্রহরায় জেলা কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর বিকেলে ওই কিশোরীর বাবা, মা ও ভাই ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক আত্মীয়কে দেখতে এসেছিলেন। সন্ধ্যায় বাড়িতে কেউ না থাকায় নূরুদ্দীন মোল্লা বাড়িতে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করেন। প্রতিবন্ধীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে নূরুদ্দীন পালিয়ে যান।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে পরদিন ২৪ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় নূরুদ্দীনকে একমাত্র আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করেন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামীম আহমেদ। তিনি ২০২৪ সালের ৩১ জুলাই নুরুদ্দীনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন।
রায় ঘোষণার বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) গোলাম রব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। এ রায় সারা দেশের জন্য একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ধর্ষণ একটি সামাজিক ব্যাধি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ রায় দেশে ধর্ষণজনিত অপরাধ কমাতে ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি আসামির জমিজমা বিক্রি করে জরিমানার অর্থ ক্ষতিগ্রস্তকে দেওয়ার জন্য জেলা কালেক্টরের প্রতি আদালতের নির্দেশনা এ–জাতীয় রায়ের ক্ষেত্রে একটি অভূতপূর্ব সংযোজন।