পদোন্নতির দাবিতে প্রশাসনিক ভবনে শিক্ষকের তালা

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্যসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে তালা ভেঙে প্রবেশ করলে শিক্ষক আবদুল আলীম ভবনের সামনে বসে পড়েনছবি: হাসান মাহমুদ

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে পদোন্নতির দাবিতে বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আবদুল আলীম প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে তিনি ক্যাম্পাসে ঢুকে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।

প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন জানান, শিক্ষক আবদুল আলীম সকালে ক্যাম্পাসে এসে প্রথমে নিজের বিভাগে যান। সেখান থেকে দুপুর ১২টার দিকে প্রশাসনিক ভবনে যান। একপর্যায়ে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এসে মূল ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেন তিনি। কিছুক্ষণ পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্যসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সেখানে এসে তালা ভেঙে ভবনে প্রবেশ করেন। পরে শিক্ষক আবদুল আলীম ভবনের সামনে বসে পড়েন।

শিক্ষক আবদুল আলীম জানান, চার বছর আগে তাঁর পদোন্নতির নির্ধারিত সময় ছিল। কিন্তু পদোন্নতি দেওয়া হচ্ছে না। পদোন্নতির সব শর্ত পূরণ করেছেন তিনি। পদোন্নতি কমিটিও তাঁর পক্ষে সুপারিশ করেছে। এরপরও একটি সিন্ডিকেট তাঁর পদোন্নতি আটকে রেখেছে। সে জন্য প্রতিবাদ জানাতে এই কর্মসূচি শুরু করেছেন তিনি।

শিক্ষক আবদুল আলীম বলেন, ‘পদোন্নতি আমার প্রাপ্য অধিকার। আমাকে আমার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাই বাধ্য হয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যতক্ষণ পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না পাব, ততক্ষণ প্রশাসনিক ভবনের সামনেই বসে থাকব।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হাফিজা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতিটি বিষয় নিয়মে চলে। নিয়মের বাইরে আমরা কেউ না। বিশ্ববিদ্যালয় রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার ক্ষমতা উপাচার্যের নেই। রিজেন্ট বোর্ড সিদ্ধান্ত না দিলে পদোন্নতি হবে না, এটিই স্বাভাবিক। তবে ওই শিক্ষকের পদোন্নতির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। একজন শিক্ষক হয়ে বিষয়টি না বুঝলে কিছু করার থাকে না। শিক্ষক হয়ে পিয়নের কাছ থেকে চাবি কেড়ে ভবনে তালা দেওয়া ভালো দেখায় না। শিক্ষকের এই আচরণ কষ্টকর।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি সূত্র জানায়, ক্যাম্পাসে শিক্ষকদের দুটি পক্ষ আছে। এক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও সাবেক প্রক্টর আওয়াল কবির। আবদুল আলীম শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি আওয়াল কবিরের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য এম রোস্তম আলীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ক্যাম্পাসে সোচ্চার হন তাঁরা। তখন উপাচার্যের সঙ্গে আলীমের মানসিক দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। এরপরই আটকে যায় আবদুল আলীমের পদোন্নতি।