ধর্মপাশা উপজেলা চেয়ারম্যানের মৃত্যু নিয়ে ফেসবুকে গুজব, থানায় জিডি

ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন
ছবি: সংগৃহীত

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হোসেন ওরফে রোকনকে (৩৭) নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে গুজব ছড়ানো হয়েছে। জীবিত থাকার পরও ১৮ সেপ্টেম্বর আলেহা বেগম নামের একজনের ফেসবুক আইডি থেকে তাঁর মৃত্যু নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়। এ ঘটনায় জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে গতকাল সোমবার রাতে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন মোজাম্মেল হোসেন।

মোজাম্মেল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন বলেন, ‘আমার মৃত্যুর মিথ্যা খবরটি ফেসবুকে দেখে ধর্মপাশা উপজেলার অনেক নেতা ওই দিনই আমাকে জানান। পরে আমি নিজেও দেখেছি। জনপ্রতিনিধি হওয়ায় আমার নামে এমন মিথ্যা অপপ্রচার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারিত হওয়ায় আমিসহ আমার পরিবার ও আত্মীয়স্বজন সবাই বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি। এ ঘটনার পর আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ জন্য থানায় জিডি করেছি।’

থানায় জিডিতে মোজাম্মেল হোসেন উল্লেখ করেন, তিনি ধর্মপাশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে আছেন। ১৮ সেপ্টেম্বর আলেহা বেগম নামের একজনের ফেসবুক আইডি থেকে একটি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। একটি শোক সংবাদ। ধর্মপাশা ‍উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন রোকন ইন্তেকাল করেছেন। জানাজার নামাজের সময় পরে জানানো হবে। তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’ এ ঘটনায় তিনি ও তাঁর পরিবার নিরাপত্তাহীনতা ও বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছেন বলে জিডিতে উল্লেখ করেন তিনি।

ধর্মপাশা থানার উপপরিদর্শক আবদুস সবুর বলেন, গতকাল রাতে উপজেলা চেয়ারম্যান থানায় এসে একটি জিডি করেছেন। তদন্ত করে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ফেসবুকে আলেহা বেগম নামের যে আইডি থেকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের মৃত্যুর ভুয়া খবর প্রচার করা হয়েছে, ওই নারীর পরিচয় পাওয়া গেছে। তাঁর বাড়ি পাশের মধ্যনগর উপজেলার চামরদানী ইউনিয়নের জলুষা গ্রামে। তিনি ওই ইউনিয়নের ৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক সংরক্ষিত নারী সদস্য। খবরটি তিনি জেনে অবাক হয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, কেউ তাঁকে বিপদে ফেলতে এমন খবর ছড়িয়েছে।

আলেহা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘একজনের সহায়তায় ছয়-সাত বছর আগে আমার নামে একটি ফেসবুক আইডি খোলা হয়েছিল। কিন্তু আইডি ব্যবহারের ছয় মাস পর আমার ফোনটি পানিতে পড়ে যায়। এর পর থেকে আমি ফেসবুক ব্যবহার করি না। একটি কুচক্রী মহল আমাকে বিপদে ফেলতে আমার নাম ও ছবি ব্যবহার করে আইডি খুলে উপজেলা চেয়ারম্যানের মৃত্যুর খবরের পোস্ট ফেসবুকে দিয়েছে। খবরটি শুনে আমি নিজেও অবাক হয়েছি। এ ঘটনায় জড়িত সবাইকে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি। এ নিয়ে আমি থানায় জিডি করেছি।’

মধ্যনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এমরান হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় সাবেক ওই নারী ইউপি সদস্য থানায় একটি জিডি করেছেন। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।