‘এত দিনে তো জেলে পচে মরতাম’

মরিয়ম বেগম ওরফে বদনী মেম্বারছবি : প্রথম আলো

আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় আসামি ছিলেন মরিয়ম বেগম ওরফে বদনী মেম্বার। ২০০৪ সালে চট্টগ্রামের সিইউএফএল ঘাটে ১০ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় যে মামলা হয়, এর এজাহারে নাম ছিল না বদনীর। তবে অভিযোগপত্রে নাম আসায় পুলিশ গ্রেপ্তার করে তাঁকে। ছয় মাস জেলও খাটেন তিনি। তবে এসব কিছুই দমাতে পারেনি তাঁকে। সেই দিনগুলোর কথা মনে করে বদনী বলেন, ‘এত দিন জেলেই পচে মরতাম হয়তো। হাল ছাড়িনি বলে ন্যায়বিচার পেয়েছি। এখনো মানুষের সঙ্গে থাকতে পারছি।’

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তৃতীয়বারের মতো নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নেমেছেন আলোচিত বদনী মেম্বার। তিনি টানা দুবারের নারী ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। গত দুবার দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নির্বাচিত হলেও এবার দলীয় মনোনয়ন না থাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন তিনি। তবে আনোয়ারার বহুল আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা থেকে খালাসপ্রাপ্ত হওয়ার পর তিনি বেশি আলোচনায় আসেন।

বদনী বলেন, ‘মামলা মাথায় নিয়েই ২০১১ সালে বৈরাগ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নারী সদস্য নির্বাচিত হয়েছি। ২০১৪ সালে মামলা থেকে খালাস পেয়েই উপজেলা নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করে জয়লাভ করেছি। ২০১৯ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পুনরায় নারী ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হই।’

এলাকাবাসীরা জানান, নারী ভাইস চেয়ারম্যান হওয়ার সুবাদে বদনী মেম্বার বর্তমানে উপজেলা নারী উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি হওয়া ছাড়াও নিজের এলাকায় ৮টি এবং পুরো উপজেলার ২৬টি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত। দিনে পাঁচ থেকে ছয়টি সালিশ বৈঠক করেন তিনি। সপ্তাহে তিন দিন উপজেলা পরিষদে অফিসও করতেন। বয়সের ভারে খানিকটা ন্যুব্জ হলেও দমে যাননি। সব মিলিয়ে ২১ বছরের বেশি সময় ধরে জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করছেন বদনী।

এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বদনী মেম্বারের সঙ্গে লড়ছেন আইনজীবী চুমকী চৌধুরী ও পারভীন হাবিব। তিনজনই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।

‘এবারও জনগণ আমাকে বিপুল ভোটে জিতিয়ে আনবেন’—এমন আশা ব্যক্ত করে বদনী মেম্বার বলেন, ‘আমার এখানে অসহায় নারী ও গরিবদের সালিশ বৈঠক বেশি হয়। আমি নিরপেক্ষ থেকে সমাধানের চেষ্টা করি। এলাকার লোকজন আমাকে ভালোবাসেন।’