বেড়ানো শেষে তিন সহকর্মী বানেশ্বরে গিয়েছিলেন আম কিনতে, পথে মৃত্যু

সড়ক দুর্ঘটনার প্রতীকী ছবিএআই দিয়ে তৈরি

রাজশাহীতে আম কিনে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চারজনের তিনজনই গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। নিহত ব্যক্তিদের সবার পরিচয় জানা গেছে। তাঁদের মরদেহ নিতে নাটোর ও রাজশাহীতে অবস্থান করছেন বন্ধু ও স্বজনেরা।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন ঢাকার মিরপুরের সাগর আহমেদ (৩০), কাজীপাড়ার শহিদুল ইসলাম (৩০) ও গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুরের আতিক হোসেন (৩০)। তাঁরা তিনজনই গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন। সাগর আহমেদ ২০২১ সালে (৪৬তম ব্যাচ) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। অন্য নিহত ব্যক্তি নাটোর সদর উপজেলার বনবেলঘরিয়ার বাসিন্দা সিএনজিচালক মো. বাবু (৪২)।

গতকাল শুক্রবার বিকেলে নাটোর সদর উপজেলার বনবেলঘরিয়া এলাকায় নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কে একটি বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে তাঁদের মৃত্যু হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ঝলমলিয়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান ও নিহত সাগরের বন্ধু মাসুম আহমেদ।

নাটোরের বনবেলঘরিয়া এলাকায় নাটোর-রাজশাহী মহাসড়কে বাসের ধাক্কায় দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া সিএনজিচালিত অটোরিকশা
ছবি: ভিডিও থেকে সংগৃহীত

ঝলমলিয়া হাইওয়ে থানা সূত্রে জানা গেছে, আজ শনিবার সকালে নিহত সাগর আহমেদ ও অটোরিকশাচালক বাবুর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। অন্য দুজন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যাওয়ায় তাঁদের মরদেহ আছে রাজপাড়া থানায়। সেখানে মরদেহ নিতে অবস্থান করছেন স্বজনেরা।

হাইওয়ে থানার ওসি মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনার পরপরই নিহত ব্যক্তিদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া সম্ভব হয়নি। অসমর্থিত সূত্র থেকে সাগর আহমেদকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বলা হয়েছিল। তবে তাঁর বন্ধুরা আজ নিশ্চিত করেছেন, তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা শেষ করে গাজীপুরের একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন।’ মহাসড়কে অটোরিকশার চলাচল নিয়ে তিনি বলেন, ‘এটা অন্যায়। আমরা প্রায়ই তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিই। দুর্ঘটনাকবলিত সিএনজি অটোরিকশাটি পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে মহাসড়কে চলছিল।’

নিহত সাগর আহমেদের লাশ আনতে গিয়েছিলেন তাঁর বন্ধু মাসুম আহমেদ। তিনি বলেন, সাগরের সঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগে পড়তেন তিনি। ২০২১ সালে তাঁরা মাস্টার্স শেষ করেন। সাগর নিহত অপর দুজনের সঙ্গে একই পোশাক কারখানায় চাকরি করতেন। তাঁরা রাজশাহীতে বেড়াতে এসেছিলেন গত বৃহস্পতিবার। বেড়ানো শেষে গতকাল বিকেলে রাজশাহীর বানেশ্বরে আম কিনতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে আম কিনে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় নাটোরে যাচ্ছিলেন। সেখান থেকে ঢাকায় ফেরার কথা ছিল। পথে দুর্ঘটনায় তাঁরা মারা যান।

আরও পড়ুন