বালিয়াকান্দিতে উপজেলা চেয়ারম্যানের কক্ষে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে আটকে নির্যাতনের অভিযোগ

রাজবাড়ী জেলার মানচিত্র

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যানের কক্ষে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে নির্যাতন, চাঁদা দাবি ও সাদা স্ট্যাম্পে সই নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় শুক্রবার দুপুরে বালিয়াকান্দি থানায় মামলা করেছেন ওই ব্যবসায়ী। রতন কর্মকার (৪৮) নামের ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি বালিয়াকান্দি উপজেলা শহরে।

রতন কর্মকার মামলায় প্রধান আসামি করেছেন উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য বাবুল মন্ডলকে (৪৪)। বাবুল বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও বহরপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামানের চাচাতো ভাই। মামলায় আরও তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলায় রতন কর্মকার অভিযোগ করেন, ১৯৯৬ সাল থেকে তিনি স্বর্ণ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি দোকানে বসে কাজ করছিলেন। বেলা সোয়া তিনটার দিকে স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা ইলিশকোল গ্রামের বাবুল মন্ডল, ইকরাম মোল্লা, বাঁধন তাঁর দোকানে আসেন। তাঁরা রতনকে বলেন, ভাইস চেয়ারম্যান দ্রুত তাঁকে যেতে বলেছেন। তিনি বাসস্ট্যান্ডের তিন রাস্তার মোড়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও বালিয়াকান্দি বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামানের অফিসে যান। তখন ভাইস চেয়ারম্যানের উপস্থিতিতে তাঁর চাচাতো ভাই বাবুল মন্ডল চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে রতনকে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে ইকরাম মোল্লা ও বাঁধন তাঁকে মারধর করে দুটি সাদা কাগজে সই করিয়ে নেন। এরপর তাঁর কাছ থেকে চাঁদা দাবি করা হয়।

রতন কর্মকার আরও বলেন, ‘আমি কিছু জমিজমা বিক্রি করে নতুন বাড়ি করছি। বাড়ির কাজ শুরুর পর আমার থেকে মোট চারবার চাঁদা নিয়েছে। চাঁদার পরিমাণ কম হওয়ায় আমি কাউকে কিছু বলিনি। মদ খাওয়ার জন্য এসব চাঁদা নিয়েছেন তাঁরা। কিন্তু এবার অনেক টাকা চাঁদা দাবি করা হয়েছে। না দিতে চাওয়ায় আমাকে অনেক মারধর করা হয়েছে।’

নিজের কার্যালয়ে রতন কর্মকারকে মারধর করার বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবি করেন বালিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, ‘রতন মানুষ হিসেবে ভালো না। সে মানসিকভাবে স্বাভাবিক নয়। মাদক গ্রহণ করে। রিহ্যাবে ছিল। বাড়ি করা নিয়ে একজন শিক্ষকের সঙ্গে তার ঝামেলা ছিল। এতে স্থানীয় লোকজন দুটি পক্ষ নেয়। আমি বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি। এটি রতনের পক্ষেই গেছে। তবু আমার বিরুদ্ধে সে মিথ্যা অভিযোগ করেছে।’

বালিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, রতন কর্মকারের অভিযোগটি শুক্রবার দুপুরে থানায় মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। বাড়ি তোলার সময় টাকাপয়সা চাওয়া নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। প্রতিপক্ষেরও অভিযোগ আছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান ওসি।