কসবায় ‘মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায়’ ইউপি সদস্যকে মারধরের অভিযোগ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মানচিত্র

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলায় মাদক ব্যবসা ও সেবনে বাধা দেওয়ায় এক ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যকে প্রকাশ্যে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের দেলী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

মারধরের শিকার খোকন মিয়া নামের ওই ইউপি সদস্য রাতে একই গ্রামের মিরাজ মিয়ার (২৭) বিরুদ্ধে কসবা থানায় মামলা করেছেন। রাতে এক দফা অভিযান চালালেও আসামিকে এখনো গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

মারধরের শিকার খোকন মিয়া কসবা উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য এবং দেলী গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় তাঁর কানের পর্দা ফেটে গেছে। কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কানের চিকিৎসার জন্য তাঁকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

মো. খোকন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, মিরাজ মিয়া নামের অভিযুক্ত ব্যক্তি মাদক ব্যবসা, সেবন ও চোরাই মোটরসাইকেলের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এসব কাজে বাধা দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে গতকাল সন্ধ্যায় দেলী খেলার মাঠে জনসম্মুখে মিরাজ তাঁকে মারধর করেন।

একপর্যায়ে তাঁর কানে আঘাত করলে কানের পর্দা ফেটে যায়। তিনি অভিযোগ করেন, তাঁকে পিস্তল দিয়ে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। খাড়েরা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও দেলী গ্রামের বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, মিরাজ সম্মানিত লোকদের অসম্মান ও মারধর করেন। তাঁর আক্রমণ থেকে তিনিও রেহাই পাননি। তাঁকেও জনসম্মুখে অপমান করা হয়েছে। পরে মিরাজের বাবা এসে বিষয়টি মিটমাট করেন।

খাড়েরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কবির আহাম্মদ খান বলেন, ইউপি সদস্য খোকন মিয়া মারধরের শিকার হয়েছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে মিরাজ মিয়ার মুঠোফোন একাধিকবার কল দেওয়া হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর বাবা আবু কাউছার প্রথম আলোকে বলেন, মিরাজ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত নয়। তিনি বলেন, ‘আমার ছেলে বিদেশ থেকে এসেছে কয়েক মাস আগে।

মাঠে খেলা নিয়ে খোকন মেম্বারের সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব হয়েছে। এর আগে কালাম মেম্বার ছেলেকে খারাপ কথা বলায় তার সঙ্গেও দ্বন্দ্ব হয়েছিল।’ কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা আকিব আকরাম বলেন, ইউপি সদস্য খোকন মিয়া কানে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। তাঁকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হয়েছে।

কসবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাসুদ উল আলম প্রথম আলোকে বলেন, আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

কসবা থানার ওসি মুহাম্মদ মহিউদ্দিন বলেন, মাদক ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় ইউপি সদস্যকে মারধরের ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন তিনি। রাতেই অভিযুক্ত মিরাজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করতে এলাকায় পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পুলিশের খবর পেয়ে পালিয়ে গেছেন তিনি।