নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ হিন্দুদের কথা ভুলে যায়: ফখরুল

ঠাকুরগাঁওয়ে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের সদস্য সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার বিকেলে শহরের শহীদ মোহাম্মদ আলী সড়কে
ছবি: প্রথম আলো

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনের দিন হিন্দুদের ব্যবহার করে। এরপর তাঁদের কথা ভুলে যায়।

সোমবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও শহরের শহীদ মোহাম্মদ আলী সড়কে জেলা বিএনপির কার্যালয়ে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।

জেলা বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, জেলায় হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট পুনর্গঠনের কাজ চলছে। এর ধারাবাহিকতায় নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে।

কল্যাণ ফ্রন্টের জেলা সভাপতি মনোরঞ্জন সিং, সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ কুমার কুণ্ডু ও সাংগঠনিক সম্পাদক সুকুমার রায়ের হাতে সদস্য ফরম তুলে দিয়ে কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন বিএনপির মহাসচিব। এ সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের ১২০ জন নারী ও পুরুষ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টে যোগ দেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির গঠনতন্ত্রে ধর্মীয় স্বাধীনতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধে বিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে। এটা নিয়ে কোনো দ্বিমত নেই বরং এখানে পারস্পরিক সম্প্রীতির বিষয় রয়েছে। এই মূল্যবোধ থেকে বিএনপি সব সময় হিন্দুদের মর্যাদা দিয়ে আসছে।

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমরা একটি চেতনা নিয়ে যুদ্ধ করেছিলাম। সেটা হলো হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান একসঙ্গে বাসযোগ্য একটি স্বাধীন বাংলাদেশ, সাম্যের বাংলাদেশ, ন্যায়বিচারের বাংলাদেশ, মানবিক মর্যাদার বাংলাদেশ পাব। হিন্দু বা মুসলিম আমার পরিচয় নয়। আমার পরিচয় আমি বাংলাদেশি। বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী দর্শনে এ কথাটি পরিষ্কারভাবে বলা আছে। এ দেশে কেউ সংখ্যালঘু বা সংখ্যাগুরু নন—সবাই বাংলাদেশি।’

মনোরঞ্জন সিংয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি তৈমুর রহমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় মহাসচিব এস এন তরুণ দে, যুগ্ম মহাসচিব মিল্টন বৈদ্য, জেলা সাধারণ সম্পাদক সত্যজিৎ কুমার কুণ্ডু প্রমুখ।

এ সময় পীরগঞ্জ উপজেলার খনগাঁওয়ের কার্তিক চন্দ্র রায় ও রানীশংকৈল পৌর এলাকার সাবেত্রী রানী সংগঠনে তাঁদের যোগদানের কারণ উল্লেখ করে বক্তব্য দেন

কার্তিক চন্দ্র রায় বলেন, ‘সারা দেশে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে। এই নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পেতেই হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’

এ দেশে হিন্দুদের আওয়ামী লীগ করার কোনো বাস্তবতা নেই দাবি করে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় মহাসচিব এস এন তরুণ দে বলেন, হিন্দুদের যত জমি দখল হয়েছে—তা করেছে আওয়ামী লীগ। গত ১ বছরে ১৫৪ জন হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক মারা গেছেন। এসব ঘটনার কোনো বিচার হয়নি।