স্কুলে স্কুলে গিয়ে বিনা মূল্যে রক্তের গ্রুপ জানিয়ে দেয় তারা

আনোয়ারা ব্লাড ডোনেট গ্রুপের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কার্যক্রম
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামের আনোয়ারায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডির জন্য রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কাজে দুটি সংগঠনের ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছে। তারা বিনা মূল্যে রক্তের গ্রুপ জানিয়ে দিচ্ছে শিক্ষার্থীদের। আনোয়ারা ব্লাড ডোনেট গ্রুপ ও আনোয়ারা ব্লাড ব্যাংক নামে দুটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শিক্ষার্থীদের সহায়তা করতে এমন উদ্যোগ নিয়েছে।

অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের ইউনিক আইডির জন্য রক্তের গ্রুপ জানা দরকার হওয়ায় বিপাকে পড়েন অভিভাবকেরা। তাঁদের বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে টাকা দিয়ে রক্তের গ্রুপ জানতে হচ্ছিল। তখন আনোয়ারা ব্লাড ডোনেট গ্রুপ ও আনোয়ারা ব্লাড ব্যাংক নামে দুটি সংগঠন বিদ্যালয়ে বিদ্যালয়ে গিয়ে বিনা মূল্যে রক্তের গ্রুপ জানিয়ে দিচ্ছে।

আনোয়ারা ব্লাড ডোনেট গ্রুপ গত দুই সপ্তাহে ১০ বিদ্যালয়ের ৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করে দিয়েছে। আর আনোয়ারা ব্লাড ব্যাংক একই সময়ে পাঁচটি বিদ্যালয়ের দেড় হাজার শিক্ষার্থীর রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করেছে।

শিক্ষা ও বিদ্যালয়–সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পাঁচ বছর বয়সী প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষার্থী থেকে ১৭ বছর বয়সের দ্বাদশ শ্রেণির সব ছাত্রছাত্রী পাবে এই ইউনিক আইডি। এই আইডিতে একটি শনাক্ত নম্বর থাকবে, যা পরবর্তী সময়ে ওই শিক্ষার্থীর জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর হবে। জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরিতে আলাদা করে তথ্য সংগ্রহের প্রয়োজন হবে না। আর এ কারণে শিক্ষার্থীদের রক্তের গ্রুপ লাগছে।

উপজেলার বরুমচড়া গ্রামের অভিভাবক মো. রশিদ বলেন, ‘আমাকে সন্তানের রক্তের গ্রুপ জানার জন্য চাতরী-চৌমুহনী কিংবা রুস্তমহাটে যেতে হতো। এতে যাতায়াতের পাশাপাশি টাকা দিয়ে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করতে হতো। কিন্তু এখন নিজের গ্রামে বসে বিনা মূল্যে সন্তানের রক্তের গ্রুপ জেনেছি। এতে আমার ভোগান্তি কমেছে এবং টাকা সাশ্রয় হয়েছে।’

স্থানীয় একটি বিদ্যালয়ে আনোয়ারা ব্লাড ব্যাংকের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় কার্যক্রম
ছবি: প্রথম আলো

আনোয়ারা ব্লাড ব্যাংকের স্বেচ্ছাসেবক আলী নূর বলেন, ‘আমরা বিনা মূল্যে রক্তের গ্রুপ জানিয়ে দিচ্ছি। আমরা প্রত্যন্ত অঞ্চলে গিয়ে এসব করছি শিক্ষার্থীদের কষ্ট কমিয়ে আনতে।’

আনোয়ারা ব্লাড ডোনেট গ্রুপের অন্যতম উদ্যোক্তা ছলিম আল আনোয়ার বলেন, ‘আমরা ধারাবাহিকভাবে শিক্ষার্থীদের রক্তের গ্রুপ জানিয়ে দিচ্ছি এবং তাদের হাতে কার্ডও দিচ্ছি।’

আনোয়ারা উপজেলার পশ্চিম বরুমচড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি সেলিম উদ্দিন বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ে স্বেচ্ছাসেবকেরা এসে শিক্ষার্থীদের রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করে গেছে।’

এই সংগঠন দুটিতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে আছেন স্থানীয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থী, প্রবাসী তরুণ, ব্যবসায়ী ও চাকরিজীবীরা। তারা রক্তের গ্রুপ নির্ণয়ের পাশাপাশি সারা বছর রক্ত জোগাড় করে দেয়। স্বেচ্ছাসেবকেরা নিজেরা রক্তদান করেন। অন্যদের কাছ থেকে রক্ত জোগাড় করে দেন। সংগঠন দুটি অনলাইনেও রক্ত জোগাড়ে সহায়তা করে।