খুলনায় ৬০০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস কিনতে দীর্ঘ লাইন

‘খুলনা ফুড ব্যাংক’ নামের এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সাধারণ মানুষের জন্য ৬০০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রি করেছে। মাংস কিনতে ক্রেতাদের দীর্ঘ সারি। শুক্রবার সকালে শিববাড়ি মোড়েছবি: সাদ্দাম হোসেন

খুলনায় সাধারণ ক্রেতাদের জন্য ৬০০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রি করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘খুলনা ফুড ব্যাংক’। আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় নগরের শিববাড়ি মোড়ে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়। স্বল্প মূল্যে গরুর মাংস কিনতে সকাল থেকে দীর্ঘ সারিতে দাঁড়ান ক্রেতারা। মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যেই ১৮৫ কেজি মাংস শেষ হয়ে যায়।

আজ একটি গরু জবাই করা হয়েছিল। মাংস না থাকায় অনেক ক্রেতাকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। এর আগে ২২ মার্চ একই জায়গায় দুটি গরু জবাই করা হয়েছিল। সেদিন মোট ৩১০ কেজি মাংস বিক্রি করেছিল সংগঠনটি।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে শিববাড়ি মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, মাংস কিনতে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছেন পাঁচ শতাধিক মানুষ। রোদ উপেক্ষা করে সারিতে দাঁড়িয়ে আছেন তাঁরা। সকাল ১০টার দিকে বিক্রি শুরু হলে মাংস পাবেন কি না, সেটা নিয়ে অনেক ক্রেতা সন্দিহান হয়ে পড়েন। এরপরও শেষ পর্যন্ত অনেককে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।

সারিতে দাঁড়িয়ে ছিলেন শেখপাড়া এলাকার বাসিন্দা হাসিনা বেগম। সকাল ১০টার দিকে যখন তাঁর সঙ্গে কথা হয়, তখন তিনি সারির একেবারে পেছনের দিকে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত মাংস পাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন। হাসিনা বেগম বলেন, ‘ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরেছি ৬০০ টাকায় গরুর মাংস বিক্রি হবে। এ জন্য সকাল ৯টার দিকে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছি। দাম বেশি হওয়ায় গরুর মাংস ভাগ্যে জোটে না। আজ মাংস নিতে পারলে অনেক দিন পর গরুর মাংস খেতে পারব।’

দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে এক কেজি গরুর মাংস কিনতে পেরেছেন শামসুর রহমান। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি থেকে অবসরে যাওয়া এই ব্যক্তি বলেন, ‘সিন্ডিকেটের কারণে গরুর মাংস এখন নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে গেছে। গরিবের কথা তো বলারই প্রয়োজন নেই। সেখানে ৬০০ টাকায় গরুর মাংস পাওয়া যাচ্ছে শুনে কিনতে এসেছি। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর এক কেজি মাংস নিতে পেরেছি।’

জাতীয় নির্বাচনের কয়েক মাস আগে থেকে খুলনায় গরুর মাংস ৬৫০ টাকায় বিক্রি করতেন ব্যবসায়ীরা। নির্বাচন শেষ হওয়ার এক মাসের মধ্যেই আবার মাংসের দাম বেড়ে যায়। রোজার আগে ৭০০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস বিক্রি হলেও রোজার সময় মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করে মাংসের দাম ৭২৫ টাকা নির্ধারণ করেন ব্যবসায়ীরা। এখনো সেই দামেই মাংস বিক্রি হচ্ছে।

খুলনা ফুড ব্যাংকের কোষাধ্যক্ষ মো. আসাদ শেখ প্রথম আলোকে বলেন, রমজান মাসে সাধারণ মানুষকে গরুর মাংসের স্বাদ দিতে ৬০০ টাকা কেজি গরুর মাংস বিক্রির কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়। ২২ মার্চ সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন। প্রথম দিন দুইটি গরুর মাংস বিক্রি করে ৩৯ হাজার টাকার মতো লোকসান হয়েছে। যেহেতু কার্যক্রমটি লাভের আশায় শুরু করা হয়নি, এ জন্য লোকসান হলেও তাঁরা বিক্রি অব্যাহত রেখেছেন। ক্রেতার তুলনায় মাংস কম থাকায় আজ জনপ্রতি এক কেজি করে মাংস বিক্রি করেছেন।