মনোনয়নপত্র বাতিলে ‘ষড়যন্ত্র’ দেখছেন ঢাকা-২ আসনের হাবিব

হাবিবুর রহমান
ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় সংসদের ঢাকা-২ আসনে (কেরানীগঞ্জের মডেল থানার সাতটি ইউনিয়ন, কামরাঙ্গীরচর থানার তিনটি ওয়ার্ড ও সাভারের তিনটি ইউনিয়ন) স্বতন্ত্র প্রার্থী কেরানীগঞ্জ মডেল থানা আওয়ামী লীগের সদস্য চিকিৎসক হাবিবুর রহমানের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এর পেছনে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। বলেছেন, প্রার্থিতা ফিরে পেতে দ্রুতই উচ্চ আদালতে যাবেন।

আরও পড়ুন

আজ সোমবার সকালে ঢাকা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ঢাকা-২ আসনে হাবিবুর রহমানের মনোনয়নপত্রটি বাতিল ঘোষণা করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান। কারণ হিসেবে বলা হয়, ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জমা দিতে পারেননি আওয়ামী লীগ দলীয় এই নেতা।

নিজের প্রার্থিতা বাতিল হওয়ার পরপরই হাবিবুর রহমান নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক আমার মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে। যত ষড়যন্ত্রই হোক উচ্চ আদালত কর্তৃক আমার মনোনয়নপত্র বৈধতা পাবে ইনশা আল্লাহ। শুভাকাঙ্ক্ষীদের ধৈর্য ধারণ করার বিনীত অনুরোধ করছি। বিজয় আমাদেরই হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে পরিবর্তন আমরাই করব। আল্লাহ আমাদের সহায় হউন।’

এ বিষয়ে হাবিবুর রহমানের মুঠোফোনে কল করা হলে প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। যাতে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে না পারি। আমার ধারণা এ কারণে আমার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। আমার মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আগামীকাল মঙ্গলবার উচ্চ আদালতে আবেদন করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমার শক্তি হচ্ছে জনগণ। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাঁদের দোয়ায় আশা করছি আমার পক্ষে রায় আসবে। আমি আমার প্রার্থিতা ফিরে পাব।’

ঢাকা-২ আসনে পাঁচজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। বৈধতা পেয়েছেন দুই প্রার্থী। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ দলীয় ও বর্তমান সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগের প্রার্থী কামরুল ইসলাম এবং জাতীয় পার্টির শাকিল আহমেদ। হাবিবুর ছাড়া মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়া অপর প্রার্থী হলেন ইসলামী ঐক্যজোটের মাওলানা আশরাফ আলী জিহাদী। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি আয়কর রিটার্নের প্রত্যয়িত অনুলিপি দেননি। এ ছাড়া আয়কর রিটার্নের প্রত্যয়িত কপি না থাকায় জাকের পার্টির প্রার্থী আবুল কালামের মনোনয়নপত্র স্থগিত করা হয়েছে।

এ ছাড়া রিটার্নিং কর্মকর্তা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-১ (দোহার ও নবাবগঞ্জ) আসন থেকে মনোনয়ন দাখিল করেছিলেন ৯ জন। বৈধতা পেয়েছেন সাত প্রার্থী এবং দুই প্রার্থীর মনোনয়ন স্থগিত করা হয়েছে। যাঁদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়েছে তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী সালমান এফ রহমান, জাতীয় পার্টির সালমা ইসলাম, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির সামসুজ্জামান চৌধুরী, গণফ্রন্টের শেখ মোহাম্মদ আলী, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির করম আলী, তৃণমূল বিএনপির মুফিদ খান ও জাকের পার্টির লুৎফর রহমান খান।

যথাযথ নথিপত্র জমা না দেওয়ার কারণে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের দপ্তর সম্পাদক আবদুর রহিমের এবং ন্যাশনাল পিপলস পাটির আবদুল হাকিমের মনোনয়নপত্র স্থগিত রাখা হয়েছে।

ঢাকা-৩ (কেরানীগঞ্জের পাঁচটি ইউনিয়ন) আসন থেকে ৯ জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। বৈধতা পেয়েছেন ছয় প্রার্থী ও বাতিল হয়েছে তিন প্রার্থীর। যাঁদের মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে, তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নসরুল হামিদ, বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো. জাফর, জাকের পার্টির আবদুর রাজ্জাক, জাতীয় পার্টির কুদ্দুস মনির সরকার, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আবদুস সালাম এবং বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের মো. রমজান।

১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর জাল হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী আলী রেজার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। দলের পক্ষ থেকে প্রত্যয়নপত্র না থাকায় তরীকত ফেডারেশনের আবদুল কুদ্দুস মিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। আর ৩ লাখ ৬৫ হাজার টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া এবং ঋণ খেলাপি হওয়ায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফারুকের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।