সাত বছরেও সরেনি বিদ্যুতের ৭টি খুঁটি

কলেজ রোডে লালবাগ এলাকা থেকে নেসকো অফিস পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটারে সাতটি খুঁটির অবস্থান।

সড়ক প্রশস্ত হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে বিদ্যুতের খুঁটি রয়ে গেছে। গতকাল রংপুর নগরের লালবাগহাট এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

রংপুর নগরে সড়ক প্রশস্তকরণ হলেও বিদ্যুতের খুঁটি রয়ে গেছে। বিদ্যুৎ বিভাগ (নেসকো) এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের রশি–টানাটানির কারণে নগরের কলেজ রোড এলাকায় সাতটি খুঁটি সরছেই না। এর ফলে যানবাহন চলাচলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

২০১৫ সালের জুন মাসে চার লেন সড়কের কাজ শেষ হয়। এ সময় প্রায় ১৬ কিলোমিটার চার লেন সড়কের অধিকাংশ স্থান থেকে বিদ্যুতের খুঁটি সরানো হয়। কিন্তু ওই সাতটি খুঁটি এখনো সরানো হয়নি। কলেজ রোডে লালবাগ এলাকা থেকে নেসকো অফিস পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার এলাকায় সড়কের পাশে সাতটি খুঁটির অবস্থান।

সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, খুঁটি সরানোর জন্য সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে দুই প্রতিষ্ঠানকে জানানো হয়েছে। সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী আজম আলী বলেন, নগরের মধ্যে এই চার লেন সড়ক নির্মাণ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ)। তারা এই সড়কের তত্ত্বাবধান করে। এখানে সিটি করপোরেশনের কোনো দায়িত্ব নেই। তারপরও একাধিকবার নেসকো ও সওজ বিভাগকে খুঁটি সরানোর তাগাদা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সাত বছরেও বিদ্যুতের খুঁটি সরানো হয়নি।

ওই সড়কের ভেতরে বিদ্যুতের খুঁটি থাকায় যানবাহন চলাচলে ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। সড়কের মধ্যে বিদ্যুতের খুঁটি না সরানোর কারণে এই পথে দুর্ভোগে পড়তে হয় শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি–পেশার নাগরিকদের। ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক আলী আকবর বলেন, গুরুত্বপূর্ণ সড়কের পাশে কয়েকটি খুঁটি থাকায় রিকশা চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। মাঝেমধ্যে এই খুঁটিতে অটোরিকশা ধাক্কা খেয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে অবিলম্বে খুঁটি সরানো দরকার।

লালবাগ এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটির পাশ দিয়ে কারমাইকেল কলেজ ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হেঁটে চলাচল করছেন। সড়কের মধ্যে খুঁটি পথচারীদের হাঁটার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থী নাজমুন নাহার বলেন, ‘প্রায় সময় এই খুঁটিতে স্পার্ক হয়ে থাকে। তখন ছোটাছুটি করতে হয়।’

নেসকো রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী জাকির হোসেন বলেন, ‘আমার জানামতে এটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের সড়ক। এই সড়ক থেকে খুঁটি সরাতে গেলে ওই বিভাগের (সওজ) পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে। তবেই খুঁটি সরানো সম্ভব। এ ব্যাপারে তারা কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ফলে আমাদের কিছু করণীয় নেই।’

এ প্রসঙ্গে পাল্টা বক্তব্য দিয়ে রংপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুব হোসেন বলেন, ‘যারা খুঁটি বসিয়েছে, খুঁটি সরানোর কাজও তাদের। এখানে আমাদের খুঁটি সরানোর প্রয়োজনীয় অর্থও নেই।’

সড়কের মধ্যে বিদ্যুতের খুঁটি না সরানো প্রসঙ্গে রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য বিদ্যৎ বিভাগ (নেসকো) এবং সওজকে একাধিকবার জানানো হলেও তারা কাজটি এখানো করেনি। বিষয়টি দুঃখজনক। আশা করছি, তারা গুরুত্ব সহকারে যত দ্রুত সম্ভব খুঁটিগুলো সরিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নেবে।’