শুমারির তথ্য বলছে, হাকালুকি হাওরে পাখির সংখ্যা কমেছে

মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরে পাখিশুমারিতে দেশে বিরল প্রজাতির একটি বৈকাল তিলিহাঁস দেখা যায়ছবি: বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের সৌজন্যে

মৌলভীবাজারের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন হাকালুকি হাওরে জলচর পরিযায়ী পাখির সংখ্যা গত কয়েক বছরের তুলনায় কম দেখা গেছে। হাওরের বিভিন্ন বিলে দুই দিনব্যাপী পাখি শুমারির পর আজ শনিবার সকালে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এ তথ্য জানিয়েছেন।

১৯৯৯ সালে সরকার হাকালুকি হাওরকে প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ বা ইকোলজিক্যালি ক্রিটিক্যাল এরিয়া) ঘোষণা করে।

বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের একটি প্রতিনিধি দল ২৩ ও ২৪ জানুয়ারি হাওরের ৪৫টি বিলে এ শুমারি চালায়। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ওমর শাহাদাতের নেতৃত্বে আট সদস্যের দল এতে অংশ নেয়। বাংলাদেশ বন অধিদপ্তর ও হাওরের উন্নয়নে কর্মরত বেসরকারি সংস্থা সিএনআরএস (সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্সেস স্টাডিজ) শুমারিতে সহযোগিতা করে।

ওমর শাহাদাত প্রথম আলোকে বলেন, হাকালুকি দেশের বৃহত্তম হাওর। শুমারিতে হাওরে ৬০ প্রজাতির মোট ৩৫ হাজার ২৬৮টি পাখি পাওয়া গেছে। এর মধ্যে পিংলা বিলে বিশ্বব্যাপী বিপন্ন দুটি বেয়ারের ভূতিহাঁস দেখা যায়। নাগুয়া-লরিবাই বিলে বাংলাদেশে বিরল প্রজাতির একটি বৈকাল তিলিহাঁসেরও দেখা মেলে। গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার পাখির সংখ্যা তুলনামূলক কম দেখা গেছে।

হাওরে পাখির সংখ্যা কমে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে ওমর শাহাদাত বলেন, পরিবেশের ওপর বৈশ্বিক উষ্ণতার বিরূপ প্রভাব, অবাধে মাছ আহরণ এবং কৃষি আবাদে যথেচ্ছ রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারে এটা ঘটতে পারে। শুমারির সময় বিভিন্ন বিলে মাছ ধরতে দেখা গেছে। কয়েকটি বিল প্রায় পানিশূন্য করে মাছ ধরা হয়েছে।

বার্ড ক্লাব সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালে হাকালুকি হাওরে পাখিশুমারি হয়নি। এর আগে ২০২৩ সালের শুমারিতে এ হাওরে ৫২ প্রজাতির ৩৭ হাজার ৭৭৮টি, ২০২২ সালে ৫১ প্রজাতির ৩৬ হাজার ৫০১টি পাখি দেখা গিয়েছিল। এ ছাড়া ২০২০ সালে ৫৩ প্রজাতির ৪০ হাজার ১২৬টি এবং আগের বছর ২০১৯ সালে ৫১ প্রজাতির ৩৭ হাজার ৯৩১টি পাখির দেখা মিলেছিল।

এবারের শুমারিতে অংশ নেওয়া দলের অন্য সদস্যরা হলেন ফা-তু-জো খালেক মিলা, সুলতান আহমেদ, মো. সাব্বির আহাম্মেদ, উজ্জ্বল দাস, আবু মুসা রাজু, মাহফুজ হিমেল ও খোরশেদ আলম।