প্রবাসীদের টাকায় ১৭ জনের নির্বাচন

১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ৬৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

নির্বাচন
প্রতীকী ছবি

সিলেটের জাতীয় সংসদ বা স্থানীয় নির্বাচনসহ সব নির্বাচনেই প্রবাসীরা প্রার্থীদের পক্ষে টাকা খরচ করেন। এবারও জেলা পরিষদ নির্বাচনে একই ধারা অব্যাহত আছে। ১৭ অক্টোবর অনুষ্ঠেয় সিলেট জেলা পরিষদ নির্বাচনে মোট ৬৪ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে ১৭ জন প্রবাসীদের দানের টাকায় নির্বাচন করছেন।

রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত নাসির উদ্দিন খান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর বাইরে সংরক্ষিত ৫টি ওয়ার্ডে ১৭ জন নারী এবং ১৩টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৪৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

প্রার্থীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে হলফনামার পাশাপাশি ‘ফরম-ঢ’ নামের একটি ফরম জমা দিয়েছেন। এ ফরমে নির্বাচনী পরিচালনাবাবদ খরচের হিসাব জমা দেওয়ার বিধান আছে। তা ঘেঁটে দেখা গেছে, প্রার্থীদের মধ্যে ১৭ জন প্রবাসীদের কাছ থেকে পাওয়া দানের টাকায় নির্বাচন করবেন। এসব প্রার্থী মোট ১০ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রবাসীদের কাছ থেকে নির্বাচনী ব্যয়ের জন্য পাবেন বলে উল্লেখ করেছেন।

সিলেটের জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শুকুর মাহমুদ মিঞা বলেন, প্রার্থীরা নির্বাচনে কোন খাতে কত ব্যয় করবেন বা খরচের টাকার উৎস কী, তা ফরম ঢ-তে উল্লেখ করতে হয়। সে অনুযায়ী যেন প্রার্থীরা নির্বাচনে ব্যয় করেন, সেটা কড়াকড়িভাবে দেখা হয়ে থাকে।

১ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন প্রার্থী আছেন। এর মধ্যে মো. মোছাদ্দিক আহমদ নামের এক প্রার্থী নির্বাচনে ব্যয় করার জন্য ৫০ হাজার টাকা যুক্তরাজ্যপ্রবাসী এক ভাইয়ের কাছ থেকে পাবেন বলে ফরমে লিখেছেন। মোহাম্মদ আবদুল আউয়াল ৩ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁর ওয়ার্ডের তিনজন প্রার্থীর মধ্যে কেবল তিনিই প্রবাসী চাচাতো ভাইয়ের কাছ থেকে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত দান হিসেবে ৪০ হাজার টাকা পাবেন বলে জানিয়েছেন।

৪ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী তিনজন। এর মধ্যে দুজনই প্রার্থীই প্রবাসী আত্মীয়ের কাছ থেকে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত দান পেয়ে নির্বাচনে খরচ করবেন। এ ওয়ার্ডে প্রার্থী আতিকুর রহমান যুক্তরাজ্যপ্রবাসী দুই বোনের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা এবং প্রার্থী মো. নাসির উদ্দিন যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ভাইয়ের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা পাবেন। তিনজন প্রার্থী ৫ নম্বর ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এর মধ্যে মো. আ. হামিদ যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ভাই ও বোনের কাছ থেকে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত দান হিসেবে পাওয়া ৫০ হাজার টাকা পাবেন বলে উল্লেখ করেছেন। একই ওয়ার্ডে আহমদ বহলুল নামের আরেক প্রার্থী প্রবাসী ভাইয়ের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা পাবেন বলে ফরমে লিখেছেন।

৬ নম্বর ওয়ার্ডের দুজন প্রার্থীই প্রবাসী স্বজনের কাছ থেকে টাকা পেয়ে নির্বাচনে খরচ করবেন। গিয়াস উদ্দিন আহমদ প্রবাসী চাচাতো বোনের কাছ থেকে পাওয়া ৫০ হাজার টাকা নির্বাচনে খরচ করবেন। সহল আল রাজী চৌধুরী নামের অপর প্রার্থী যুক্তরাজ্যপ্রবাসী দুই ভাইয়ের কাছ থেকে ৯০ হাজার টাকা পেয়ে ব্যয় করবেন। চারজন প্রার্থী আছেন ৭ নম্বর ওয়ার্ডে। এর মধ্যে এম মুজিবুর রহমান মুজিব নামের একজন প্রার্থী যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ভাইয়ের কাছ থেকে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত দান হিসেবে পাবেন ৫০ হাজার টাকা।

৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী আছেন নয়জন। এর মধ্যে দুজন প্রবাসীদের আর্থিক সহায়তা পাচ্ছেন। তাঁরা হলেন মো. মাহমুদ আলী ও মো. নজরুল হোসেন। মাহমুদ যুক্তরাজ্যপ্রবাসী ভাইয়ের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা এবং নজরুল যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী মা ও ভাই থেকে স্বেচ্ছাপ্রণোদিত দান হিসেবে পাবেন ১ লাখ টাকা। ফখরুল ইসলাম ১২ নম্বর ওয়ার্ডে প্রার্থী হয়েছেন। নির্বাচন করতে তিনি প্রবাসী ভাইয়ের কাছ থেকে ২০ হাজার ধার হিসেবে পেয়েছেন। ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন প্রার্থীর মধ্যে আবদুর রহমান প্রবাসী ভাগনের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা এবং প্রবাসী ছেলের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা পাবেন বলে উল্লেখ করেছেন।

১ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে তিনজন নারী প্রার্থী হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রার্থী ফারজানা রহমান প্রবাসী দুই ভাইয়ের কাছ থেকে পাবেন ৭০ হাজার টাকা। একই ওয়ার্ডে জান্নাতুন নাসরিন নামের আরেক প্রার্থী যুক্তরাজ্যপ্রবাসী দুই মামার কাছ থেকে পাবেন ৯০ হাজার টাকা। চারজন নারী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ২ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডে। সেখানে প্রার্থী শামীমা আক্তার কৃষি ও প্রবাসী আয় থেকে ১ লাখ টাকা ব্যয় করবেন। ৫ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের দুজন প্রার্থীর মধ্যে সাজনা সুলতানা হক চৌধুরী প্রবাসে অবস্থানরত বাবার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ধার নিয়ে নির্বাচনে খরচ করবেন।