উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে দুই সশস্ত্র গোষ্ঠীর গোলাগুলিতে রোহিঙ্গা যুবক নিহত

কক্সবাজারের একটি রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির
ফাইল ছবি: প্রথম আলো

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-৩) মিয়ানমারের দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে গোলাগুলিতে এক রোহিঙ্গা যুবকের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল রোববার রাত আটটার দিকে আশ্রয়শিবিরের সি ও ডি ব্লকের মাঝামাঝি আরাকান স্যালভেশন আর্মি (আরসা) ও আরাকান রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশনের (আরএসও) মধ্যে গোলাগুলির এ ঘটনা ঘটে।

নিহত যুবকের নাম সৈয়দ আমিন (৩৪)। তিনি ওই ক্যাম্পের বি ব্লকের শরণার্থী ছিলেন।

মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা (মাঝি) সাব্বির আহমদ বলেন, মধুরছড়া আশ্রয়শিবিরের ডি ব্লকে গত দুই মাসে অন্তত তিনবার দুই সন্ত্রাসী বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। আশ্রয়শিবিরটি আগে আরসা নিয়ন্ত্রণ করত, এখন সেখানে আরএসও ঢুকে পড়েছে। এ কারণে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। তাতে আশ্রয়শিবিরে থাকা অন্তত ৬৫ হাজার রোহিঙ্গা আতঙ্কে আছে।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন বলেন, রাতে আশ্রয়শিবিরের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মিয়ানমারের দুটি সশস্ত্র গোষ্ঠীর মধ্যে থেমে থেমে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। তাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে রোহিঙ্গা সৈয়দ আমিনের মৃত্যু হয়েছে। তিনি ওই আশ্রয়শিবিরের সাধারণ রোহিঙ্গা। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। সন্ত্রাসীদের ধরতে আশ্রয়শিবিরে অভিযান চালাচ্ছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের দেওয়া তথ্যমতে, গত সাড়ে ৮ মাসে আশ্রয়শিবিরে ৫৬টি সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ৬৮ জন রোহিঙ্গার মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ১৭ জন রোহিঙ্গা মাঝি, ২১ জন আরসা সদস্য, ৩ জন আরএসও সদস্য, ১ জন স্বেচ্ছাসেবক ও অন্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা।

এর আগে সর্বশেষ গত ৯ অক্টোবর উখিয়ার বালুখালী (ক্যাম্প-৮) ও কুতুপালং আশ্রয়শিবিরে (ক্যাম্প-২ ই) আরসা ও আরএসওর মধ্যে পৃথক গোলাগুলির ঘটনায় রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী ছানা উল্লাহ (২৭) ও আহম্মদ হোসেন (৩৬) নিহত হন। দুজনই আরসার সদস্য ছিলেন। গত ৩ অক্টোবর রাতে বালুখালী আশ্রয়শিবিরে দুই পক্ষের গোলাগুলি ও সংঘর্ষের ঘটনায় আরসার শীর্ষ কমান্ডার মো. ইউসুফ (৩৮) ও আরএসও সদস্য মো. আরাফাত নিহত হন।