তালায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাচীরে সর্বহারা পার্টির দেয়াললিখন, মানুষের মধ্যে আতঙ্ক
‘লেনিনের জন্মদিনে আহ্বান—সংস্কার নয়, সর্বহারা বিপ্লবেই গণপরিত্রাণ, পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (এম-এল)’। তালা শিশুতীর্থ স্কুলের সীমানাপ্রাচীরে এভাবে দেয়াললিখন করা হয়েছে। সাতক্ষীরার তালা উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেয়ালে এ ধরনের লেখা দেখা যাচ্ছে কয়েক দিন ধরে। এতে এলাকাজুড়ে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় দুজন বলেন, তাঁদের ধারণা, সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনসহ সর্বহারা দলের সদস্যরা আবারও একত্র হওয়ার পাঁয়তারা শুরু করেছে। এলাকায় অস্থিতিশীল করতে সর্বহারা পার্টি একত্র হচ্ছে বলে তাঁরা মনে করছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান তাঁরা। না হলে নব্বই দশকের মতো তালা এলাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়তে পারে।
সরেজমিনে তালা শিশুতীর্থ স্কুল ছাড়াও শিবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইসলামকাটী ইউনিয়নের সুজনশাহা এলাকায় নিষিদ্ধ পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টির পক্ষে বিভিন্ন দেয়ালে বিভিন্ন ধরনের লেখা দেখা গেছে।
এ ব্যাপারে তালা উপজেলা যুব জামায়াতের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান রহমান বলেন, তালা উপজেলাকে অশান্ত করতে সর্বহারা পার্টি একত্র হওয়ার বিষয়টি জানান দিচ্ছে এসব লেখার মাধ্যমে। এ ছাড়া কোনো একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে ঘায়েল করতে এটি করে থাকতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রশাসনের কাছে তিনি বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।
তালা উপজেলা নাগরিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম বলেন, গত দু-তিন দিন ধরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দেয়ালে নিষিদ্ধ সর্বহারা পার্টির নামে যা লেখা হয়েছে, তাতে জনমনে কিছুটা আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। তবে এটি কোনো একটি পক্ষের ষড়যন্ত্রের অংশ হতে পারে বলে মনে করেন তিনি।
তালা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ শাহিনুর রহমান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার পাশাপাশি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে। তাঁরা বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নেমেছে উল্লেখ করে ওসি বলেন, এ ব্যাপারে পুলিশ সতর্ক আছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
নব্বইয়ের দশকে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি তালা ও ডুমুরিয়া উপজেলায় চাঁদাবাজির পাশাপাশি খুনখারাবির মতো কার্যক্রম চালাত। সর্বহারাদের হাতে অনেকেই খুন হয়েছেন, অনেকে হয়েছেন নিঃস্ব। তালায় একসঙ্গে ‘ফাইভ মার্ডার’-এর মতো ঘটনাও ঘটেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর নজরদারি এবং অভিযানের মাধ্যমে ধীরে ধীরে তারা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। সম্প্রতি আবারও তাদের দেয়াললিখন এলাকায় অশুভ বার্তা দিচ্ছে বলে ধারণা করছে অনেকেই।