রংপুরের পায়রাবন্দ ইউপির চেয়ারম্যানকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ১

ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবর রহমান
ছবি: সংগৃহীত

রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মাহবুবর রহমানকে (৫৫) কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার রাতে পায়রাবন্দ বাজারে এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত অভিযোগে হারুন মিয়া (৪৫) নামের এক ব্যক্তিকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করেছেন স্থানীয় জনতা।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন বলছেন, হারুন এলাকার একজন চিহ্নিত মাদকসেবী। নিহত চেয়ারম্যান মাহবুবর রহমান রংপুর জেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও মিঠাপুকুর উপজেলা ছাত্রশিবিরের সাবেক সেক্রেটারি। তবে উপজেলা জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে তিনি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকলেও কোন পদে ছিলেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

মিঠাপুকুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নুর আলম সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, আটক হারুন মিয়া প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছেন, স্ত্রীর সঙ্গে কিছুদিন আগে তাঁর বিচ্ছেদ হয়। এরপর শিশুসন্তানকে নিয়ে স্ত্রী চলে গেছেন। সন্তানকে ফিরে পেতে হারুন চেয়ারম্যানের কাছে বিচার দিয়েছিলেন। কিন্তু চেয়ারম্যান কোনো বিচার না করায় তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছেন।

আটক হারুন মিয়া
ছবি: সংগৃহীত

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাত ৯টার দিকে বাড়ির পাশে অবস্থিত পায়রাবন্দ বাজারে একটি মাছের দোকানের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ইউপির চেয়ারম্যান মাহবুবর রহমান। এ সময় বাজারের মাছ ব্যবসায়ী হারুন মিয়া অতর্কিতভাবে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাঁর ঘাড়ের ওপরে গলায় আঘাত করেন। এতে প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। উপস্থিত লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় মাহবুবরকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা রাত সাড়ে ১০টার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনার সময় বাজারের লোকজন অভিযুক্ত হারুন মিয়াকে আটক করে মিঠাপুকুর থানার পুলিশের হাতে তুলে দেন। তাঁর বাড়িও ওই বাজারের পাশে।

মিঠাপুকুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নুর আলম সিদ্দিক আজ সোমবার ভোরে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, মাছ কাটার ধারালো বঁটি দিয়ে অতর্কিতভাবে চেয়ারম্যানকে কোপ দেন হারুন মিয়া। এতে চেয়ারম্যানের গলায় অন্তত চার ইঞ্চি লম্বা ও তিন ইঞ্চি গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। এ ছাড়া তাঁর বাঁ হাতের কনুইয়ের নিচে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা রাত সাড়ে ১০টার দিকে চেয়ারম্যানকে মৃত ঘোষণা করেন। চেয়ারম্যান স্থানীয় জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিলেন। এ ঘটনায় থানায় হত্যা মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।