দিওড় ইউপি চেয়ারম্যানের পদ শূন্য ঘোষণা

দিনাজপুর জেলার মানচিত্র

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার দিওড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে। ওই ইউপির ৯ সদস্য তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনায় তাঁর বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।

সোমবার স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব জেসমীন প্রধান স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে দিওড় ইউপির চেয়ারম্যানের পদ শূন্য ঘোষণা করা হয়।


চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, দিওড় ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মালেক মিয়ার বিরুদ্ধে বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন ইউপির ৯ সদস্য। ইউপি সদস্যরা তাঁর বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদের সভার কার্যবিবরণী লেখা, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত আসনের সদস্যের ছাড়াই স্থায়ী কমিটির সভা করা, প্রকল্প কমিটির সভা ও এলজিএসপি সভাসহ অন্যান্য সভা আহ্বান না করা, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা ও মাতৃত্বকালীন ভাতা দেওয়ার সুপারিশের ক্ষেত্রে উপকারভোগীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার ভিজিএফের ৫০ বস্তা এবং ভিজিডির ৭ বস্তা চাল ইউনিয়ন পরিষদে রক্ষিত করা, ভিজিএফের চাল বিতরণের বিষয়ে ট্যাগ অফিসার ও ইউপি সদস্যদের অবহিত না করা এবং কর বাবদ আদায় করা ৩৩ হাজার ৩৭৭ টাকা নিজের কাছে রাখার অভিযোগ করেছেন। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁরা ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব করেছেন। সরেজমিন তদন্তে অভিযোগগুলো প্রমাণিত হয়েছে।

চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, উক্ত অনাস্থা প্রস্তাবের বিষয়ে স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯–এর ৩৯ ধারা অনুযায়ী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা লুৎফর রহমান মণ্ডল বিশেষ সভা আহ্বান করে গোপন ব্যালটের মাধ্যমে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ও বিপক্ষে ভোট গ্রহণ করা হয়। এতে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ৯টি ভোট পড়ে, যা দুই–তৃতীয়াংশের বেশি। চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ওই ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো প্রমাণিত হওয়ায় এবং বিশেষ সভায় অনাস্থা প্রস্তাবটি দুই–তৃতীয়াংশের বেশি ভোটে গৃহীত বর্ণিত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কর্তৃক জনস্বার্থে ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব পালন করা সমীচীন হবে না মর্মে বিবেচিত হওয়ায় জেলা প্রশাসক দিনাজপুরের কাছে পাঠানো অনাস্থা প্রস্তাবটি সরকার কর্তৃক স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯–এর ৩৯ ধারা অনুযায়ী অনুমোদিত হয়েছে। সেহেতু স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯–এর ৩৯ (১৩) ধারা অনুযায়ী জনস্বার্থে অনাস্থা প্রস্তাবটি অনুমোদিত হওয়ায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মালেক মিয়ার পদটি একই আইনের ৩৫(১)(চ) ধারা অনুযায়ী শূন্য ঘোষণা করা হলো।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পরিমল কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯–এর ৩৫ (২) ধারা অনুযায়ী, ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মালেকের পদ শূন্য ঘোষণা হয়েছে। শিগগিরই এ–সংক্রান্ত গেজেট জারি করা হবে।

এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ইউপি সদস্য কর্তৃক আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। আমি আজ (সোমবার) রাতে ঢাকা যাচ্ছি, মঙ্গলবার সকালে এ বিষয়ে হাইকোর্টে রিট করব।’