কুমিল্লায় পাহাড়িকা এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনের চাকা লাইনচ্যুত, গোধূলী ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল

কুমিল্লায় লাইনচ্যুত হওয়া পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন। শনিবার বিকেলে আদর্শ সদর উপজেলা রসুলপুর রেলওয়ে স্টেশন এলাকায়ছবি: প্রথম আলো

কুমিল্লায় অল্প সময়ের ব্যবধানে পৃথক এলাকায় দুটি ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। শনিবার বিকেলে পাঁচটার দিকে আদর্শ সদর উপজেলার রসুলপুর রেলস্টেশন এলাকায় সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী ‘পাহাড়িকা এক্সপ্রেস’ ট্রেনের ইঞ্জিনের আটটি চাকা লাইনচ্যুত হয়। অন্যদিকে বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে লালমাই উপজেলার শ্রীনিবাসন এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী ‘মহানগর গোধূলী’ ট্রেনের ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন দুই ট্রেনের যাত্রীরা।

পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের চাকা লাইনচ্যুত হওয়ায় রসুলপুর রেলস্টেশন এলাকায় ডাউন লাইনে (চট্টগ্রামমুখী লাইন) ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে। তবে আপার লাইনে (ঢাকামুখী লাইন) দুই দিকের ট্রেন চলাচল করছে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্ত লাইনচ্যুত হওয়া ট্রেনের চাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন রসুলপুর রেলস্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার নাহিদ উদ্দিন।

নাহিদ উদ্দিন জানান, আজ বিকেলে সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি রসুলপুর স্টেশন এলাকায় ডাউন লাইন থেকে লুপলাইন যাওয়ার সময় পয়েন্টের মুখে ইঞ্জিনের আটটি চাকা লাইনচ্যুত হয়ে যায়। ইঞ্জিনের চাকা লাইনচ্যুত হলেও বগিগুলো লাইনে ছিল। যার কারণে যাত্রীরা কেউ হতাহত হননি। এ ঘটনার পর আপার লাইন দিয়ে দুই দিকের ট্রেন চলাচল করছে।

সন্ধ্যায় কুমিল্লা রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) লিয়াকত আলী মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, এখনো লাইনচ্যুত হওয়া ট্রেনটির ইঞ্জিনের চাকা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। তবে চাকা উদ্ধারের জন্য আখাউড়া থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন আনা হয়েছে। ইতিমধ্যে উদ্ধারকাজ শুরু করেছে। আশা করছেন, দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হয়ে যাবে। এরপর ট্রেনটি চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে। এ দুর্ঘটনার কারণে ট্রেন চলাচলে কোনো ব্যাঘাত ঘটেনি। ডাবল লাইন হওয়ায় এক লাইন দিয়েই দুই দিকের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক আছে।

অন্যদিকে মহানগর গোধূলী ট্রেনটির ইঞ্জিন বিকল হওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা পর ইঞ্জিন মেরামত করে সন্ধ্যা ৬টা ৪০ মিনিটের দিকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। কুমিল্লা রেলস্টেশনের মাস্টার শেখ আনোয়ার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রাম স্টেশনে থাকা ঢাকাগামী মহানগর গোধূলী ট্রেনটি লালমাই এলাকায় এলে হঠাৎ করে ইঞ্জিন বিকল হয়ে যায়। প্রায় এক ঘণ্টা পর মেরামত শেষে একই ইঞ্জিনে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। কুমিল্লায় কাছাকাছি সময়ে দুটি ট্রেন দুর্ঘটনার কবলে পড়লেও ডাবল হওয়ায় টেন চলাচলে কোনো অসুবিধা হয়নি। এক লাইন দিয়ে দুই দিকের ট্রেন চলাচল করছে।

সিলেট থেকে লাকসামগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রী আজাদ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, রসুলপুর স্টেশনে প্রবেশের সময় হঠাৎ বিকট শব্দে ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়। এ সময় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে শেষ পর্যন্ত কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে ট্রেনটি বিকল হয়ে পড়ে থাকায় তাঁরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বিশেষ করে নারী ও শিশুরা বেশি কষ্ট পাচ্ছে।