নড়াইলে স্বামীকে হত্যার দায়ে স্ত্রীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

প্রতীকী ছবি

নড়াইলের কালিয়া উপজেলায় স্বামীকে হত্যার দায়ে এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আদালত রায়ে তাঁকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরের নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. আকরাম হোসেন এ আদেশ দেন।

সাজাপ্রাপ্ত নারী হলেন আমেনা খাতুন (৩৫)। তিনি নড়াইলের কালিয়া উপজেলার আমতলা গ্রামের বাসিন্দা। তবে আমেনা খাতুন রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন না। সরকারি কৌঁসুলি ইমদাদুল ইসলাম এমদাদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, প্রায় ১৪ বছর আগে আমেনা খাতুনের সঙ্গে ফুলদাহ গ্রামের মো. সবুর শেখের ছেলে ইবাদুল শেখের বিয়ে হয়। তাঁদের তিন ছেলে–মেয়ে আছে। ইবাদুল ভ্যানচালক ছিলেন। সংসারে অভাব–অনটন নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এ কারণে আমেনা খাতুন মাঝেমধ্যেই তাঁর বাবার বাড়িতে চলে যেতেন। ২০২০ সালের ৯ মে আমেনা আবার তাঁর বাবার বাড়িতে চলে যান। রাতে ইবাদুল তাঁর স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে শ্বশুরবাড়ি আমতলা গ্রামে যান। পরের দিন ১০ মে সকালে ইবাদুলের বাবা ফোনের মাধ্যমে জানতে পারেন, তাঁর ছেলে আত্মহত্যা করেছেন।

সংবাদ পেয়ে ইবাদুলের বাবা সবুর শেখ কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে আমতলা গ্রামে গিয়ে দেখতে পান, ইবাদুল বাড়ির পাশের বাঁশের সঙ্গে গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় আছেন।

সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতালে পাঠায়। এ ঘটনায় কালিয়া থানায় অপমৃত্যু মামলা করা হয়।

পরে মামলাটি পিবিআই তদন্ত করে। তদন্তকালে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আমেনা খাতুন পুলিশের কাছে স্বামীকে হত্যার কথা স্বীকার করেন। আদালতে আমেনা খাতুন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন। পিবিআই তদন্ত শেষে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আমেনা খাতুনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।

এ দিকে বিচারিক প্রক্রিয়া চলার সময় আমেনা খাতুন আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে আত্মগোপন করেন। মোট ১৭ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আমেনার বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হওয়ায় আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।