পঞ্চগড়ে জমি নিয়ে সংঘর্ষে তরুণের মৃত্যু, আওয়ামী লীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৫

পঞ্চগড় জেলার মানচিত্র

পঞ্চগড়ে জমিজমা–সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে সংঘর্ষে আহত এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। এদিকে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে আজ রোববার ভোরে পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ও হাড়িভাসা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

৮ জুলাই পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাড়িভাসা ইউনিয়নের বড়বাড়ি প্রধানপাড়া এলাকায় জমি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে নিহত তরুণের নাম মো. শামীম (২৬)। তিনি বড়বাড়ি প্রধানপাড়া এলাকার মো. সামিউল হকের ছেলে।

এ ঘটনায় ১৩ জুলাই নিহত তরুণের চাচা সফিউল আলম বাদী হয়ে পঞ্চগড় আদালতে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল হোসেনসহ ২৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। পরে ওই তরুণের মৃত্যুর পর আজ সকালে মামলাটি পঞ্চগড় সদর থানায় এজাহার হিসেবে গ্রহণ করা হয়। এ ছাড়া ৮ জুলাই রাতে অপর পক্ষের আনছার আলী বাদী হয়ে আটজনকে আসামি করে সদর থানায় একটি মারামারির মামলা করেন। মামলায় নিহত তরুণ মো. শামীমও আসামি ছিলেন।

পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হোসেন ছাড়া অন্য চারজন হলেন আবুল হোসেনের ছেলে খাজা নাজিম উদ্দিন (২৬), ভাই আজিজার রহমান (৫৫) এবং তাঁর ছেলে মো. বাবু (২৩) ও মো. তানজিদ (২১)। আজ দুপুরে গ্রেপ্তার পাঁচজনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় আসামিপক্ষ জামিনের আবেদন করলে পঞ্চগড়ের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অলরাম কার্জী কাল সোমবার জামিন শুনানির দিন ধার্য করে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পুলিশ, মামলার এজাহার ও দুই পক্ষের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাড়িভাসা ইউনিয়নের বড়বাড়ি প্রধানপাড়া এলাকার সফিউল আলমের পরিবারের সঙ্গে একই এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা আবুল হোসেনের পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। ৮ জুলাই সকালে বিরোধপূর্ণ জমিতে ধান লাগানোকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায় দুই পক্ষ। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সফিউল পক্ষের আহত ছয়জনের মধ্যে শামীম ও তাঁর বাবা সামিউলের (৫৫) অবস্থার অবনতি হলে তাঁদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীম গতকাল রাতে মারা যান।

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল লতিফ মিঞা প্রথম আলোকে বলেন, জমি নিয়ে মারামারির ঘটনায় আহত তরুণ রংপুর মেডিকেল কলেজে মারা গেছেন। আজ দুপুরে রংপুরেই তাঁর লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়া অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।