প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্ক আছে, এমন সন্দেহে চিকিৎসককে খুন করেন সাবেক সহকারী

নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জনসেবা হাসপাতালের সামনে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেনছবি: প্রথম আলো

নাটোরের জনসেবা হাসপাতালের মালিক ও চিকিৎসক আবু হাসান মো. আমিরুল ইসলামকে (৬৫) তাঁর এক চাকরিচ্যুত কর্মচারী গলা কেটে হত্যা করেছেন। তাঁর প্রেমিকার সঙ্গে সম্পর্ক আছে, এমন সন্দেহে চিকিৎসককে খুন করেন তিনি।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টায় শহরের মাদ্রাসা মোড়ের জনসেবা হাসপাতালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে নাটোরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আমজাদ হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন। এ সময় অভিযুক্ত আবু আসাদকে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসা হলেও তাঁকে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হয়নি।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার ৩০ ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশ এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্‌ঘাটন করে। ঘটনার পরপরই হাসপাতালের চাকরিচ্যুত ওই কর্মচারীসহ ছয় কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়।

জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে অভিযুক্ত আবু আসাদ পুলিশকে জানান, তিনি ২০২৪ সাল থেকে এই চিকিৎসকের ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এর মধ্যে হাসপাতালের এক নার্সের সঙ্গে তাঁর (আবু আসাদ) প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তিনি ওই নার্সকে বিয়ে করতে চাইলে আমিরুল ইসলাম তাতে রাজি হননি। বরং গত আগস্ট মাসে তাঁকে চাকরিচ্যুত করা হয়। তাঁর ধারণা, নার্সের সঙ্গে ওই চিকিৎসকের অনৈতিক সম্পর্ক ছিল। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তিনি হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন।

হত্যাকাণ্ডে আটক আবু আসাদকে ঘটনাস্থলে নিয়ে আসা হয়
ছবি: প্রথম আলো

১ সেপ্টেম্বর রাতে অভিযুক্ত আবু আসাদ বোরকা পরে ছুরি নিয়ে হাসপাতালে ঢোকেন। চিকিৎসক নিজ কক্ষ থেকে রোগী দেখার জন্য বের হলে তিনি সেই কক্ষে ঢুকে খাটের নিচে অবস্থান নেন। ভোর চারটার দিকে চিকিৎসক ঘুমিয়ে পড়লে ছুরি দিয়ে প্রথমে গলা কাটেন, পরে পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলেন।

সকাল ছয়টার দিকে আসাদ বোরকা পরে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে পালিয়ে যান। পুলিশ হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি উদ্ধার করেছে। তবে বোরকা চলনবিলে ফেলে দেওয়ায় তা উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বর্তমানে অভিযুক্ত আবু আসাদ এবং ওই নার্সসহ হাসপাতালের ছয় কর্মী পুলিশের হেফাজতে আছেন।

পুলিশ সুপার জানান, এ ঘটনায় ওই চিকিৎসকের স্ত্রী তাসমিন সুলতানা (৫৪) গতকাল সোমবার রাতে একটি হত্যা মামলা করেন। আবু আসাদকে আসামি হিসেবে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হবে। আগামীকাল বুধবার তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে। আটক অন্যদের নজরদারিতে রাখবে পুলিশ।