মায়ের সঙ্গে গোসলে নেমে ভেসে যায় তিন বোন, একজনের লাশ উদ্ধার
মায়ের সঙ্গে নদীতে গোসলে নেমেছিল তিন বোন—মরিয়ম (৭), তৈয়বা (১০) ও টিয়া (১৪)। পানিতে বল নিয়ে খেলছিল তারা। হঠাৎ হাত ফসকে বলটি স্রোতে ভেসে যায়। বল ধরতে গিয়ে স্রোতের টানে একসঙ্গে তিন বোনই ভেসে যায়। স্থানীয় লোকজন ছোট দুই বোনকে উদ্ধার করতে পারলেও নিখোঁজ হয় তৈয়বা। ঘটনার ৩৩ ঘণ্টা পর উদ্ধার হয়েছে তার লাশ।
ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের মুশকিলাহাটী এলাকায়। মারা যাওয়া তৈয়বা স্থানীয় একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। মেয়েদের বাবা কামাল মিয়া পেশায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী।
স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার বেলা ১১টার দিকে মেঘনা নদীর ভৈরব রেলসেতু এলাকায় কবিতা বেগম তাঁর তিন মেয়েকে নিয়ে গোসল করতে যান। মেয়েরা পানিতে নেমে বল হাতে খেলছিল। এ সময় বলটি হাত থেকে ছুটে স্রোতের টানে দূরে চলে যায়। বল আনতে গিয়ে হঠাৎ তিন বোনই পানির স্রোতে ভেসে যায়। মা কাপড় ধোয়ার কাজে ব্যস্ত ছিলেন। নদীতে মেয়েদের ডুবে যেতে দেখে চিৎকার করেন তিনি। আশপাশে থাকা অন্যরা ছুটে এসে মরিয়ম ও টিয়াকে জীবিত উদ্ধার করেন। তবে তলিয়ে যায় তৈয়বা।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ভৈরব ইউনিটের সদস্যরা নদীতে তল্লাশি শুরু করেন। পরে ময়মনসিংহ থেকে আসা ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল অভিযানে যোগ দেয়। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে দুর্ঘটনাস্থল থেকে কিছুটা দূরে নদীতে ভেসে ওঠে তৈয়বার লাশ।
তৈয়বার বাবা কামাল মিয়া বলেন, ‘আমার মেয়েরা ভালো করে সাঁতার জানত না। বল নিয়ে নদীতে গোসল করা আমার মেয়েদের পছন্দ। এই বলই আমার মেয়ের জীবন নিয়ে গেল।’ তিনি আরও বলেন, ছোট ও বড় মেয়ে সুস্থ আছে।
উদ্ধারকাজে নেতৃত্ব দেন ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিসের ওয়্যারহাউস পরিদর্শক আজিজুল হক। তিনি বলেন, মেঘনায় স্রোত ছিল। এ জন্য উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা কঠিন ছিল।