প্রাকৃতিক খাবার খাওয়া সিংড়ার ‘কালো মানিকের’ দাম হাঁকা হচ্ছে ১১ লাখ

গায়ের রং কালো হওয়ায় আদর করে খামারি গোলাম মোস্তফা গরুটির নাম রেখেছেন কালো মানিক। গরুটির দাম হাঁকা হচ্ছে ১১ লাখ টাকাছবি: প্রথম আলো

কালো রঙের সুঠাম দেহের ষাঁড় গরু। গায়ের রং কালো হওয়ায় খামারি গোলাম মোস্তফা আদর করে নাম রেখেছেন কালো মানিক। গরুটির দাম হাঁকা হচ্ছে ১১ লাখ টাকা। মোস্তফার খামারে কালো মানিকের মতো এমন আরও সাতটি গরু আছে। স্থানীয় পর্যায়ে ক্রেতা না পাওয়ায় গরুগুলো ঢাকায় নিয়ে বিক্রির কথা জানালেন এই খামারি।

নাটোরের সিংড়া পৌরসভার দমদমা মহল্লার খামারি গোলাম মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, দেশীয় পদ্ধতিতে খড়, খইল, ভুসিসহ প্রাকৃতিক খাবারে নিজের বাড়িতে কালো মানিকসহ সাতটি গরু লালন-পালন করেছেন। এর মধ্যে কালো মানিকের দাম চাইছেন ১১ লাখ টাকা।

ষাঁড় গরুটি বাড়ি থেকে বের করতে দুই থেকে তিনজন লোকের দরকার হয়। অতি যত্নে সন্তানের মতো লালন–পালন করেন গোলাম মোস্তফা। তবে শারীরিক গঠন ও অতিমাত্রায় শক্তিশালী হওয়ায় সবার নজর থাকে কালো মানিকের দিকে। মোস্তফা ছাড়া পরিবারের অন্য কেউ তার পরিচর্যা করতে পারেন না।

গোলাম মোস্তফা জানালেন, প্রায় আট মাস আগে চুয়াডাঙ্গা থেকে ৫ লাখ টাকা দিয়ে গরুটি কিনেছিলেন। তখন শারীরিক গঠন ও স্বাস্থ্য এমন সুন্দর ছিল না। চিকিৎসকের পরামর্শে কয়েক মাসের পরিশ্রমে আজকের কালো মানিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাঁর খামারের গরুগুলো দেশি পদ্ধতিতে প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে লালন–পালন করা হয়েছে। খাবারের মধ্যে খড়, ঘাস, ছোলা, মসুর ডাল ও ভুসি, ভুট্টার আটা, খুদের ভাত, খইল, ধানের কুঁড়া ও চিটাগুড়।

অতি যত্নে সন্তানের মতো গরুটিকে লালন–পালন করেছেন খামারি। যত্নসহকারে গোসল করিয়ে দিচ্ছেন
ছবি: প্রথম আলো

গত আট মাসে শুধু কালো মানিকের পেছনে আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে দাবি করেন গোলাম মোস্তফা। তাঁর প্রতিবেশীরা জানান, খামারি গোলাম মোস্তফা পরিশ্রমী মানুষ। সব সময় গরুগুলোর পেছনে লেগে থাকেন। তা ছাড়া বৈচিত্র্যপূর্ণ খাবার, চিকিৎসা ও পরিচর্যায় এখন তিনি সফল খামারি।

সিংড়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো. মোস্তফা জামান প্রথম আলোকে বলেন, সিংড়ার খামারিরা ৯২ হাজার ৫৬৬টি পশু কোরবানির জন্য তৈরি করেছেন। অনেকের বাড়ি থেকেই গরু বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এবার গরুর বাজার ভালো থাকায় সব খামারি লাভবান হবেন। প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে খামারিদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হয়। এ জন্য খামারিরা প্রাকৃতিক উপায়ে গরু মোটাতাজা করে বেশ লাভবান হচ্ছেন।