নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণ, দুই দিনে পাঁচজন আহত

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের শূন্যরেখায় বিস্ফোরণে আজ রোববার ও গতকাল শনিবার দুই দিনে পাঁচজন গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সীমান্ত পার হয়ে মহিষ আনতে গিয়ে একই স্থানে পাঁচজন আহত হয়েছেন বলে নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারমান নুরুল আবছার জানিয়েছেন। তাঁর ভাষ্য, বিস্ফোরণগুলো স্থলমাইনের।

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে ৪৭ নম্বর সীমান্ত পিলারের জারুলিয়াছড়ি সীমান্তে শূন্যরেখা থেকে কিছু ভেতরে মিয়ানমারের ভূখণ্ডে পরপর দুই দিন বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। বিস্ফোরণে আজ আহত তিনজন হলেন মো. জাফর আলমের ছেলে আবদুল্লাহ, রশিদ আহম্মদের দুই ছেলে রশিদ উল্লাহ ও মোহাম্মদ মফিজ উল্লাহ। তাঁদের সবার বাড়ি কক্সবাজারের রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৌলভীকাটা গ্রামে। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে আবদুল্লাহর দুই পা ভেঙে গেছে। অপর দুজনের হাত, বুক ও মুখ ঝলসে গেছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। গতকাল আহত দুজনের নাম পাওয়া যায়নি।

কক্সবাজার সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) আশিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, স্থলমাইন বিস্ফোরণে আহত তিনজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। অবস্থার অবনতি হওয়ায় আজ বিকেলে তিনজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল দুজন সীমান্ত পার হয়ে মিয়ানমার থেকে মহিষ নিয়ে আসার জন্য গিয়েছিলেন। মহিষ নিয়ে ফিরে আসার সময় সীমান্তের শূন্যরেখার কাছাকাছি এলে তাঁরা বিস্ফোরণে আহত হন। ঘটনাস্থলে মহিষ রেখে তাঁরা সীমান্ত অতিক্রম করে চলে আসেন। তাঁদের ফেলে আসা মহিষ নিয়ে আসার জন্য আজ সকালে তিনজন গেলে আবার বিস্ফোরণ ঘটে। এলাকার লোকজন সংবাদ পেয়ে তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে আসেন এবং চিকিৎসার জন্য কক্সবাজারে পাঠিয়ে দেন।

নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আবছার প্রথম আলোকে বলেন, সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারে সরকারি বাহিনীর সঙ্গে সে দেশের বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সংঘাত চলমান থাকায় লোকজনকে সীমান্তের কাছাকাছিও না যাওয়ার জন্য বলে দেওয়া হয়েছে। তারপরও রামুর কিছু ব্যক্তি গরু ও মহিষ নিয়ে আসার জন্য গোপনে সীমান্তের ওপারে চলে যান। মাইন বিস্ফোরণে দুই দিনে পাঁচজন আহত হওয়ার বিষয়টি উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে।

এ ব্যাপারে নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবদুল মান্নান বলেন, মাইন বিস্ফোরণে আহত হওয়ার বিষয়টি তাঁরা শুনেছেন। কিন্তু বিজিবি (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) থেকে কোনো কিছু জানানো হয়নি।

এ ব্যাপারে জানার জন্য বিজিবি নাইক্ষ্যংছড়ি ব্যাটালিয়ন কমান্ডারের সঙ্গে একাধিবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।