ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে সিলেট শহর

সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে নগরের বিভিন্ন এলাকায় মনোনয়নপ্রত্যাশীদের পক্ষে ব্যানার-ফেস্টুন লাগিয়েছেন নেতা-কর্মীরা। নগরের চৌহাট্টা এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

সিলেট নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক থেকে শুরু করে পাড়ামহল্লার অলিগলি রঙিন ব্যানার, পোস্টার, বিলবোর্ড আর ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে। এর অধিকাংশই নৌকার মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতাদের। এর বাইরে সম্ভাব্য কাউন্সিলর ও নারী কাউন্সিলরও আছেন। এভাবে প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি সম্ভাব্য প্রার্থীরা বিভিন্ন ইফতার মাহফিল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েও গণসংযোগ করছেন।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা অনুযায়ী, আগামী ২১ জুন সিলেট সিটি করপোরেশনের নির্বাচন ইভিএমে হবে। মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ২৩ মে, মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ২৫ মে। আর মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ সময় ১ জুন। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলবে।

নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পরপরই আওয়ামী লীগের ১১ জন, জাতীয় পার্টির ৩ জন এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের একজন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থী তৎপর হয়ে উঠেন। এ ছাড়া অন্তত চার শ কাউন্সিলর প্রার্থী নানাভাবে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন। তবে বিএনপি সিটি নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছে।

আরও পড়ুন

রাজনৈতিক দলগুলোর সূত্রে জানা গেছে, সিলেটে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। অন্যদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এখানে কেন্দ্রীয় কমিটির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহমুদুল হাসানকে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে। এ ছাড়া মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম, জাতীয় পার্টির নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুবুর রহমান চৌধুরী এবং যুক্তরাজ্য জাতীয় পার্টির সহসভাপতি আবদুস সামাদ মেয়র পদে নির্বাচন করতে প্রচারণা চালাচ্ছেন। এর বাইরে অন্তত চার শ কাউন্সিলর প্রার্থীও নানাভাবে প্রচার-প্রচারণা শুরু করেছেন।

নগরের চারটি ওয়ার্ডের সাতজন ভোটার জানান, নগরের ৪২টি ওয়ার্ডেই ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড ও পোস্টার সাঁটানোর কারণে ভোটের আমেজ দেখা দিয়েছে। তবে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। যেহেতু বিএনপি দলীয়ভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে না, তাই গত দুই নির্বাচনে বিএনপির মনোনয়নে জয়ী মেয়র আরিফুল স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে পারেন, এমন গুঞ্জন নগরজুড়ে আছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী ১১ জনের মধ্যে শেষ পর্যন্ত আজ শনিবার দলীয় মনোনয়ন বোর্ড প্রবাসী নেতা মো. আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে বেছে নিয়েছে। তাই দলে কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী হন কি না কিংবা আনোয়ারুজ্জামানের পক্ষে অন্য প্রার্থীরা এককাট্টা থাকবেন কি না, এ নিয়েও আলোচনা চলছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নগরের জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, বন্দরবাজার, সুরমা মার্কেট, লামাবাজার, তালতলা, আম্বরখানা, টিলাগড়, শিবগঞ্জ, নাইওরপুল, উপশহর, শাহী ঈদগাহ, কদমতলী, রিকাবিবাজারসহ ৪২টি ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক থেকে শুরু করে পাড়ামহল্লায় সম্ভাব্য মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থনে পোস্টার, বিলবোর্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন সাঁটানো হয়েছে। বিভিন্ন সিএনজি অটোরিকশা, রিকশা এবং যানবাহনের পেছনেও পোস্টার সাঁটিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।

সিলেট নগরের পনিটুলা এলাকার বাসিন্দা পলাশ তালুকদার বলেন, শহরের যে সড়ক ধরেই হাঁটবেন, একাধিক নেতার ব্যানার, বিলবোর্ড, ফেস্টুন, পোস্টার চোখে পড়বেই। এ ছাড়া সামাজিক অনুষ্ঠানগুলোতেও সম্ভাব্য প্রার্থীরা এখন যোগ দিচ্ছেন বেশি। অনেক সম্ভাব্য কাউন্সিলর প্রার্থী ঘরে ঘরে গিয়ে দোয়া চাওয়াও শুরু করেছেন। অনেক সম্ভাব্য প্রার্থী এরই মধ্যে ঈদের শুভেচ্ছাও জানিয়ে পোস্টার সাঁটিয়েছেন।

যোগাযোগ করলে সিলেটের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ফয়সল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, নির্বাচন কমিশন ভোটসহ মনোনয়নপত্র দাখিল ও বাছাইয়ের তারিখ ঘোষণা করেছে। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো সিলেট সিটি নির্বাচনের তফসিল ঘোষিত হয়নি। তবে তফসিল ঘোষিত হলে নির্বাচনী আচরণবিধি অনুযায়ী সব প্রার্থীকে প্রচারণা চালাতে হবে। আগের রঙিন পোস্টারসহ যাবতীয় ফেস্টুন, বিলবোর্ড, পোস্টার ও ব্যানার অপসারণ করতে হবে।