চলন্ত ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন, এরপর যা ঘটল
চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে সাতটায় মালবাহী একটি চলন্ত ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে সকাল ১০টায় চট্টগ্রাম থেকে একটি রিলিফ ইঞ্জিন এনে আটকা পড়া ট্রেনটি চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হয়। মিরসরাইয়ের খৈয়াছড়া ইউনিয়নের উত্তর আমবাড়িয়া এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
ইঞ্জিনে আগুন ধরে যাওয়া মালবাহী ট্রেনটির পরিচালক মো. কুতুব উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মালবাহী ৬০৪ ডাউন ট্রেনটিতে ৩২টি কনটেইনার নিয়ে কুমিল্লার আখাউড়া থেকে চট্টগ্রাম যাচ্ছিলাম। আজ সকাল আটটায় মিরসরাইয়ের বড়তাকিয়া স্টেশনের এক কিলোমিটার উত্তরে এলে ট্রেনের ইঞ্জিনে অস্বাভাবিক কালো ধোঁয়া আর আগুন দেখতে পাই। সঙ্গে সঙ্গে বিষয়টি ইঞ্জিনে থাকা লোকোমাস্টার ও কন্ট্রোল অফিসে জানিয়ে ট্রেন থামাতে বলি। এরপর স্থানীয় লোকজন পানি ছিটিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় ইঞ্জিনের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে চট্টগ্রাম থেকে আসা একটি রিলিফ ইঞ্জিনের মাধ্যমে ট্রেনটি চট্টগ্রাম নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ দুর্ঘটনায় ইঞ্জিনটির বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে।’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী উত্তর আমবাড়িয়া এলাকার বাসিন্দা মো. শামসুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সকাল সাড়ে সাতটার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে দেখি ইঞ্জিনে আগুন ধরা একটি মালবাহী ট্রেন উত্তর আমবাড়িয়ে রেলক্রসিং এলাকায় এসে থামে। আগুন দেখে স্থানীয় নারী-পুরুষ সবাই কলসি, বালতিতে পানি এনে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।’
জানতে চাইলে ইঞ্জিনে আগুন ধরা ট্রেনটির লোকোমাস্টার মো. শাহজাহান বলেন, ‘ইঞ্জিনের একটি যন্ত্র থেকে আগুনের সূত্রপাত। আগুন লাগার বিষয়টি টের পেয়ে আমরা ট্রেন থামাই। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে জানা যাবে।’
জানতে চাইলে রেলওয়ে পুলিশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাকিব খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘মিরসরাইয়ে রেলের ইঞ্জিনে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে নিরাপত্তার কাজ তদারক করেছি। আগুন লাগা ইঞ্জিনটি বেশ পুরোনো ছিল। দেখে মনে হয়েছে অনেক পুরোনো ইঞ্জিন হওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।’
জানতে চাইলে মিরসরাই ফায়ার সার্ভিস স্টেশন কর্মকর্তা মো. ইমাম হোসেন পাটোয়ারি প্রথম আলোকে বলেন, ‘বড়তাকিয়া রেলস্টেশনের উত্তর পাশে একটি রেলের ইঞ্জিনে আগুন লাগার খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি। ভেতরে থেমে থেমে আগুন জ্বলায় তা নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয়েছে। আগুনে ট্রেন ইঞ্জিনটির বড়সড় ক্ষতি হয়েছে।’
এ বিষয়ে চিনকি আস্তানা রেলস্টেশনের স্টেশনমাস্টার সিরাজুল ইসলাম বলেন, রেলের ইঞ্জিনে আগুন লাগার ঘটনায় সকাল সাড়ে ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের ডাউন লাইন বন্ধ ছিল।