নেত্রকোনায় ঋণের টাকার চাপে কৃষক দল নেতার ‘নিখোঁজ নাটক’

কৃষক দলনেতা আবদুর রাজ্জাক
ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনার বারহাট্টা উপজেলায় ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পেরে কৃষক দলের এক নেতার বিরুদ্ধে নিখোঁজ নাটক সাজানোর অভিযোগ উঠেছে। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে নিখোঁজ থাকার পর গতকাল শনিবার রাতে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বারৈখালী এলাকা ইটাখলা থেকে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে।

ওই নেতার নাম আবদুর রাজ্জাক (৫৪)। তিনি উপজেলার সাহতা ইউনিয়নের বড়গাওয়া এলাকার বাসিন্দা এবং ইউনিয়ন কৃষক দলের সভাপতি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, আবদুর রাজ্জাক স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে ৬ লাখ টাকার মতো ঋণ নেন। সম্প্রতি ঋণের টাকা পরিশোধের জন্য পাওনাদারেরা তাঁকে চাপ দিচ্ছিলেন। কিন্তু ঋণ পরিশোধে সক্ষমতা না থাকায় তিনি হতাশায় ভুগছিলেন। এর মধ্যে ১ অক্টোবর রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি স্থানীয় মাছেহালা এলাকা থেকে নিখোঁজ হন বলে পরিবারের লোকজন দাবি করেন।

কৃষক দলের নেতা নিখোঁজের ঘটনা নিয়ে দলীয় নেতা-কর্মী ও স্থানীয় লোকজনের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। দুদিন পর তাঁর ছেলে মো. রফিকুল ইসলাম এ বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ তাঁকে উদ্ধারের বিষয়ের তৎপর হয়। পরে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে গতকাল শনিবার গভীর রাতে আবদুর রাজ্জাককে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বারৈখালী এলাকা ইটাখলা থেকে উদ্ধার করা হয়।

নেত্রকোনা জেলা পুলিশের মিডিয়ার দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. হাফিজুর ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, কৃষক দলের নেতা আবদুর রাজ্জাক ঋণের টাকার চাপে আত্মগোপনে গিয়ে পরিবারকে দিয়ে নিখোঁজের নাটক সাজিয়েছেন। উদ্ধারের পর জিজ্ঞাসাবাদে আবদুর রাজ্জাক জানিয়েছেন, পাওনাদারদের চাপে তিনি বাড়ি ছেড়েছিলেন। পরে তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জসহ কয়েকটি স্থানে শ্রমিকের কাজ করেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে গতকাল রাতে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।

পরে মুচলেকা নিয়ে আবদুর রাজ্জাককে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়। তাঁর ছেলে মো. রফিকুল ইসলামের দাবি, তাঁর বাবা আত্মগোপনে আছেন, তা তিনি জানতেন না। তাই তিনি নিখোঁজের জিডি করেছিলেন। পরে গতকাল পুলিশের কাছে জেনেছেন, তাঁর বাবাকে উদ্ধার করা হয়েছে। আর পুলিশের দাবি, জিজ্ঞাসাবাদে আবদুর রাজ্জাক জানান, তাঁর অবস্থান পরিবার প্রথমে না জানলেও পরে জানানো হয়।