মুন্সিগঞ্জে কৃতী শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান

সংবর্ধনা নিতে এসে উচ্ছ্বাস–আনন্দে মেতেছে শিক্ষার্থীরা। আজ শনিবার সকালে মুন্সিগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে
ছবি: প্রথম আলো

কৃতী শিক্ষার্থীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে মুন্সিগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণ। এখানে আজ শনিবার সকাল ৮টায় শুরু হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। সকালের শীত উপেক্ষা করে সংবর্ধনা নিতে এসেছে জেলার বিভিন্ন এলাকার শিক্ষার্থীরা।

দেশের ৬৪টি জেলায় ধারাবাহিকভাবে প্রথম আলোর আয়োজনে ও শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘শিখো’র পৃষ্ঠপোষকতায় জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান হচ্ছে। এ আয়োজনে সহযোগিতা করছে ফ্রেশ, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।

মুন্সিগঞ্জে উৎসবে অংশ নিতে জেলার জিপিএ-৫ পাওয়া ৪০৬ শিক্ষার্থী নিবন্ধন করে। সকালে সূর্যের আলো ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে মাঠে হাজির হতে থাকে শিক্ষার্থীরা। সেখানে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, গল্প, হাসাহাসি আর সেলফি তোলায় মেতে ওঠে তারা। শুরু থেকে শিল্পকলা প্রাঙ্গণে সাতটি বুথ থেকে শিক্ষার্থীদের ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট ও নাশতা তুলে দিচ্ছেন মুন্সিগঞ্জ বন্ধুসভার সদস্যরা।

জাতীয় সংগীতের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান
ছবি: প্রথম আলো

লৌহজংয়ের কাজির পাগলা অভয় তালুকদার ইনস্টিটিউট থেকে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে হৃদিতা ইসলাম। গোলয়ালিমান্দা বাজার থেকে ৪০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে আরও ৪ কৃতী শিক্ষার্থী মো. শাকিল, রেশমি ইসলাম, মিথিলা মণ্ডল ও আরশি আলমের সঙ্গে উৎসবে এসেছে সে। হৃদিতা বলে, ‘আমি এখন লৌহজং সরকারি কলেজে ভর্তি হয়েছি। অন্য বন্ধুরা ভর্তি হয়েছে জেলার বিভিন্ন কলেজে। অনেক দিন হলো কারও সঙ্গে দেখা হয়নি। উৎসবে এসে অনেক বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হলো। সেলফি তুলছি, মজা করছি।’

সিরাজদিখান উপজেলার ইছাপুরা এলাকা থেকে এসেছে রিয়ানা আক্তার। সে বলে, ‘এর আগে কত মানুষকে সংবর্ধনা দিতে দেখেছি। কত মানুষের জন্য হাতে তালি দিয়েছি। তখন থেকে এমন সংবর্ধনা পাওয়ার লোভ জাগত। এ বছর এসএসসিতে জিপিএ-৫ পাওয়ায় প্রথম আলো থেকে সংবর্ধনা পাচ্ছি। সত্যি অসাধারণ এক অনুভূতি।’

শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার কুর্মিরা গ্রাম থেকে সকালে উৎসবে এসেছে এরাবিয়ান ব্যাপারী, নাহিদ হাসান, নাফিয়ান। তারা আড়িয়ল স্বর্ণময়ী উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। এরাবিয়ান বলে, ‘এমন উৎসবে আগে কখনো আসিনি। জীবনে প্রথম এ ধরনের বড় অনুষ্ঠানে এলাম। এখানে উপস্থিত হতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে, জীবনের প্রথম সফলতার শুরুটা এখান থেকে।’

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের স্মৃতি ধরে রাখতে বন্ধুদের সঙ্গে সেলফি তুলছে শিক্ষার্থীরা
ছবি: প্রথম আলো

শিল্পী আক্তার নামের এক নারী দশম শ্রেণিপড়ুয়া ছেলে ইসফার প্রধানকে নিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান দেখতে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘কত ছেলে–মেয়ে জিপিএ ৫ পেয়েছে। জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে এসেছে। ছেলেকে নিয়ে এসেছি অনুষ্ঠান দেখাতে। কৃতি শিক্ষার্থীদের দেখাতে। এতে আমার ছেলে উৎসাহিত হবে। আমি চাই, আগামী বছর ইসফারও এভাবে সংবর্ধনা পাক।’

দিনব্যাপী সংবর্ধনায় শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট, প্রথম আলো ই-পেপার (১ মাস) ও চরকির (১৫ দিন) ফ্রি সাবস্ক্রিপশন, শিখোর সৌজন্যে বিনা মূল্যে কোর্স, ফ্রেশ ব্র্যান্ডের স্ন্যাকস বক্স।

সকাল ১০টায় মুন্সিগঞ্জ বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্যে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্য মাশফিক সিহাব। স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি ফয়সাল হোসেন।

শিক্ষার্থীদের দিকনির্দেশনা দিতে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হয়েছেন মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) স্নেহাশিস দাশ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মতিউল ইসলাম, মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি সহিদ ই হাসান, মুন্সিগঞ্জ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সুজন হায়দার, প্রথম আলো ট্রাস্টের সমন্বয়ক মাহবুবা সুলতানা, সরকারি হরগঙ্গ কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুন্সি সিরাজুল হক, ক্রীড়াবিদ আয়নায়ল হক, সংগীতশিল্পী শিশির রহমান প্রমুখ।