চুয়াডাঙ্গায় আ.লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীর মোটরসাইকেল মহড়া থেকে হামলা-ভাঙচুরের ঘটনায় দুটি মামলা, গ্রেপ্তার ১

হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার উথলী এলাকায়
ছবি: শাহ আলম

চুয়াডাঙ্গা-২ (দামুড়হুদা-জীবননগর-সদর একাংশ) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী সাদিকুর রহমানের মোটরসাইকেলের মহড়া থেকে জীবননগর উপজেলার উথলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় হামলা, ট্রাক ও দোকান ভাঙচুর এবং লুটপাটের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। উথলী বাসস্ট্যান্ড বাজার কমিটির সভাপতি আসাদুর রহমান এবং ক্ষতিগ্রস্ত ট্রাকের মালিক ও চালক মো. শাহাজাহান বাদী হয়ে মঙ্গলবার রাতে জীবননগর থানায় মামলা দুটি করেন। এরই মধ্যে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আসাদুর রহমানের করা মামলায় মো. সাদিকুর রহমানকে প্রধান আসামি করে আটজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। আর অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ৪০-৫০ জনকে। এজাহারনামীয় আসামিরা হলেন সাদিকুর রহমানের ভাই রফিকুল ইসলাম, জীবননগর স্টেডিয়ামপাড়ার আবদুল্লাহ আল মামুন, দৌলতগঞ্জ এলাকার সাব্বির হোসেন, শিংনগর গ্রামের মো. রাশেদ ও মকবুল হোসেন, রাঙ্গিয়ারপোতা গ্রামের মসলেম উদ্দীন ও উথলী গ্রামের শাখাওয়াত হোসেন। অন্যদিকে ক্ষতিগ্রস্ত ট্রাকের মালিক ও চালক মো. শাহজাহানের মামলায় সাদিকুর, তাঁর ভাই রফিকুল ও সেন্টু তিনজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আটজনকে।

আসাদুর রহমানের মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে তিনজনকে কুপিয়ে জখম, ট্রাক ভাঙচুর ও ট্রাকের চালককে মারধর, ছয়টি প্রতিষ্ঠানে ৭ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের সম্পদের ক্ষতি এবং ৩ লাখ ১০ হাজার টাকা লুটের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলার ৩ নম্বর আসামি জীবননগর স্টেডিয়ামপাড়ার আবদুল্লাহ আল মামুনকে (৩২) মঙ্গলবার রাতেই গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এদিকে হামলা-ভাঙচুরের প্রতিবাদ এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে উথলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আজ বুধবার দোকান বন্ধ রেখে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন ব্যবসায়ীরা। মানববন্ধনে উথলী বাসস্ট্যান্ড বাজার কমিটির সভাপতি মো. আসাদুর রহমান, উথলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোবারক সোহেল আহম্মেদ প্রদীপ, হামলায় আহত আশানুর রহমান, রিজু মিয়া ও সাহাবুল হোসেন বক্তব্য দেন। বক্তারা সাদিকুরসহ অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশকে সাত দিন সময় বেঁধে দেন। নতুবা বৃহত্তর আন্দোলন করার হুঁশিয়ারি দেন।

আরও পড়ুন

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার বিকেলে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী সাদিকুর রহমান মোটরসাইকেলের মহড়া নিয়ে দর্শনা থেকে জীবননগরে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে উথলীতে রাস্তার পাশে দাঁড় করিয়ে রাখা একটি ট্রাকের সঙ্গে মহড়ায় অংশ নেওয়া একটি মোটরসাইকেলের ধাক্কা লাগে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মোটরসাইকেলের কয়েকজন ট্রাকটি ভাঙচুর ও চালক শাহজাহান আলীকে মারধর করেন। এ সময় উথলী বাসস্ট্যান্ড এলাকার সাধারণ লোকজন ও ব্যবসায়ীরা প্রতিবাদ করলে মহড়ায় অংশ নেওয়া নেতা-কর্মীরা লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা করেন। হামলায় আহত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনকে জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। তাঁরা হলেন উথলী গ্রামের আবদুল লতিফের ছেলে রিজু মিয়া (৪৫), ওয়াজ বক্সের ছেলে সাহাবুল হোসেন (৩৫) ও এবাদত আলীর ছেলে আশানুর রহমান (৩০)।

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী সাদিকুর রহমানের নেতৃত্বে মোটরসাইকেল মহড়া। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মহড়া থেকে উথলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে
ছবি: সংগৃহীত

জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সেলিমা আখতার বুধবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, আহত রিজু ও সাহাবুলের মাথায় এবং আশানুরের বাঁ হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তবে তিনজনই আশঙ্কামুক্ত।

মনোনয়নপ্রত্যাশী সাদিকুর রহমান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য এবং দর্শনার শেখ রাসেল স্মৃতি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি। তাঁর বাড়ি জীবননগর উপজেলার উথলী ইউনিয়নের শিংনগর গ্রামে।