হঠাৎ বাড়ির আঙিনায় এসে পড়ে বিপন্ন প্রজাতির শকুন

টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ডেইলপাড়া মোহাম্মদ আলমের বসতবাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া শকুন। গতকাল রাতেছবি: প্রথম আলো

কক্সবাজারের টেকনাফে একটি বিপন্ন প্রজাতির শকুন উদ্ধার করেছে উপকূলীয় বন বিভাগ। গতকাল সোমবার রাত সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের ডেইলপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমের বসতঘরের আঙিনা থেকে শকুনটি উদ্ধার করা হয়। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ উপকূলীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা বশির আহমেদ খান।

স্থানীয় বাসিন্দা ও বন বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল সোমবার সন্ধ্যার দিকে একঝাঁক শকুন উড়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ একটি শকুন উড়ে এসে ডেইলপাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমের বাড়ির একটি গাছে বসে। কিছুক্ষণ পর শকুনটি গাছ থেকে পড়ে যায়। এ সময় শকুন দেখতে প্রচুর লোকজন জড়ো হয়। বন বিভাগে খবর দিলে তারা শকুনটি উদ্ধার করে উপকূলীয় রেঞ্জ কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে যায়। শকুনটি আহত কি না, তা দেখার জন্য টেকনাফ প্রাণিসম্পদ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

টেকনাফ উপজেলা প্রাণিসম্পদ হাসপাতালের উপসহকারী কর্মকর্তা হারাধন চন্দ্র সুশীল বলেন, এটি একটি বিপন্ন প্রজাতির পুরুষ শকুন। বয়স ১৫-২০ বছর পর্যন্ত হতে পারে। শকুনটির ওজন প্রায় ২০ কেজি। উচ্চতা প্রায় দুই ফুট। দৈর্ঘ্য (পাখা মেলে) ৯ ফুট। কোনো কারণে উড়তে না পারায় দলছুট হয়ে মাটিতে পড়ে গিয়েছিল। তবে পাখিটির শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন নেই। শকুনটিকে দুটি মুরগির বাচ্চা খেতে দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. আবদুল্লাহ (৬০) ও মো. নুরুল ইসলাম (৫০) জানান, আগে শীত মৌসুমে শকুন দেখা যেত। তখন গরু-মহিষ ও ছাগল মারা গেলে খোলা মাঠে ফেলে রাখা হতো। দল বেঁধে মরা গরু-মহিষ-ছাগল খেতে আসত শকুন। কিন্তু ২৫-৩০ বছর ধরে এলাকায় আর শকুনের দেখা মেলে না। এ ছাড়া গবাদিপশু মারা গেলে এখন কেউ আর খোলা মাঠে ফেলে রাখে না, মাটিচাপা দেয়।

টেকনাফ উপকূলীয় রেঞ্জ কর্মকর্তা বশির আহমেদ খান প্রথম আলোকে বলেন, শকুনটিকে আজ মঙ্গলবার দুপুরের মধ্যে চকরিয়ার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারি পার্কে পাঠিয়ে দেওয়ার কাজ চলছে।