৩০ ঘণ্টা পর নিভল সীতাকুণ্ডের তুলার গুদামের আগুন
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার কুমিরা ইউনিয়নের ছোট কুমিরা এলাকার তুলার গুদামে লাগা আগুন ৩০ ঘণ্টা চেষ্টার পর নিভেছে।
আজ রোববার বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে এ আগুন সম্পূর্ণভাবে নেভাতে সক্ষম হন ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবির কর্মীরা।
এর আগে গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ওই তুলার গুদামে আগুন লাগে। মুহূর্তের মধ্যে পুরা গুদামে ছড়িয়ে পড়ে তা।
এরপর কুমিরা স্টেশনসহ একে একে ফায়ার সার্ভিসের নয়টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। এরপরও আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসায় ১০ ঘণ্টা পর যোগ দেয় সেনাবাহিনীর চারটি, নৌবাহিনীর চারটি, বিমানবাহিনীর দুটি, বিজিবির চারটি ফায়ার ফাইটিং ইউনিট।
আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিক জানাতে পারেননি ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল হামিদ মিয়া। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিকেল ৪টা ৫০ মিনিটে আগুন সম্পূর্ণভাবে নেভাতে সক্ষম হন তাঁরা। কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তার নেতৃত্বে পাঁচজনের একটি দল ও বায়েজিদ বোস্তামী স্টেশনের বিশেষ পানিবাহী গাড়ি দুর্ঘটনাস্থলে সারা রাত থাকবে।
গুদামটিতে ২ হাজার ৭০০ টন আমদানি করা তুলা ছিল জানিয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, গুদামে ঝালাইয়ের কাজ করছিলেন শ্রমিকেরা। এ সময় আগুন লাগে।
তুলার আগুন খুব সহজে নেভে না বলে সময় বেশি লেগেছে জানিয়ে ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক প্রথম আলোকে বলেন, সকাল সাড়ে আটটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এরপর তাঁরা ডাম্পিংয়ের কাজ করেন। ঘটনাস্থলের আশপাশের পানির উৎস শেষ হয়ে যাওয়ায় আগুন নেভাতে বিপাকে পড়েছিলেন তাঁরা। দুই–তিন কিলোমিটার দূরের পুকুর থেকে পানি আনতে হয়েছে।
বিমানবাহিনীর ফায়ার ইউনিটের কমান্ডার নাদেরুজ্জামান বলেন, তাঁরা এসে ফায়ার সার্ভিস কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করেছেন। দূর থেকে পানি এনে আগুন নির্বাপণে কাজ করেছেন।
বিকেল পাঁচটার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, কোথাও কোথাও পুড়ে যাওয়া তুলার মধ্য থেকে ধোঁয়া বেরোচ্ছে। সেসব জায়গায় পানি ছিটাচ্ছেন কুমিরা ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। পুরো গুদামে পুড়ে যাওয়া তুলা ছড়িয়ে–ছিটিয়ে আছে। আগুন নেভানোর প্রয়োজনে ভেঙে ফেলা হয়েছে ভবনের দেয়াল। ভেঙে পড়েছে গুদামের অবকাঠামো।
এ ঘটনা তদন্তে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক বদিউল আলমকে প্রধান করে ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। তাঁদের পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
তদন্ত কমিটির সদস্য সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. শাহাদাত হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ওয়েল্ডিং থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। বিষয়টিকে সামনে রেখে কাজ শুরু করবেন তাঁরা।
৪ মার্চ বিকেলে সীতাকুণ্ডের সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর এলাকার সীমা অক্সিজেন লিমিটেডে বিস্ফোরণে ৭ জন নিহত ও ২৪ জন আহত হয়েছেন। এর আগে গত বছরের ৪ জুন সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে রাসায়নিকের কনটেইনার বিস্ফোরণে ৫০ জন নিহত ও দুই শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছিলেন।