মাগুরায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় ছাত্রদল নেতা হত্যা মামলার আরেক আসামি গ্রেপ্তার
মাগুরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত ছাত্রদল নেতা মেহেদী হাসান রাব্বি (৩৪) ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. ফরহাদ হোসেন (২২) নিহত হওয়ার ঘটনায় হওয়া দুটি হত্যা মামলার আরও এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার ঢাকার দিকে হাতিরঝিল এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামির নাম মো. হেদায়েত কোরাইশ। তিনি যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তবে দলে কোনো পদে ছিলেন না। হেদায়েত মাগুরা পৌরসভার পারনান্দুয়ালী এলাকার নজরুল ইসলামের ছেলে। তিনি মেহেদী হাসান ও ফরহাদ হোসেন উভয় হত্যা মামলার ৯ নম্বর আসামি। পুলিশ তাঁকে মেহেদী হাসান হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে। জুলাই–আগস্টের ঘটনায় হওয়া আরও একটি মামলায় আসামি হিসেবে তাঁর নাম রয়েছে।
এ নিয়ে মেহেদী হাসান হত্যা মামলায় দুজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত জানুয়ারি মাসে এই মামলার ১১ নম্বর আসামি রাকিব শিকদাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের মাগুরা জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাগুরা জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) উপপরিদর্শক (এসআই) কাজী এহসানুল হক আজ শনিবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, হেদায়েত কোরাইশ নামের ওই আসামি ঘটনার পরপরই আত্মগোপনে চলে যান। সর্বশেষ তিনি ঢাকার হাতিরঝিল এলাকায় অবস্থান করছিলেন। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল ওই এলাকার একটি গলি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ তাঁকে আদালতে হাজির করা হবে।
মেহেদী হাসান জেলা ছাত্রদলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি মাগুরা পৌরসভার বরুণাতৈল গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে। আন্দোলনের শেষের দিকে গত ৪ আগস্ট মাগুরা শহরের ঢাকা রোড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান মেহেদী।
পুলিশ সূত্র জানায়, ছাত্রদল নেতা মেহেদী নিহত হওয়ার ঘটনায় ১৩ আগস্ট তাঁর ভাই ইউনুস আলী বাদী হয়ে মাগুরা সদর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, বীরেন শিকদারসহ ১৩ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়। এ মামলার অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে ১৫০ থেকে ২০০ জনকে।
পুলিশ সূত্র আরও জানা যায়, ৪ আগস্ট মেহেদী হাসান নিহত হওয়ার দেড় ঘণ্টা পর একই জায়গায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফরহাদ হোসেন। তিনি শ্রীপুর উপজেলার রায়নগর গ্রামের গোলাম মোস্তফার ছেলে। এ ঘটনায় তাঁর পরিবার কোনো মামলা করেনি।
তবে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ২১ আগস্ট সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেছেন সদর উপজেলার বিরপুর গ্রামের মো. জামাল হোসেন। মামলায় মাগুরা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শিখর, মাগুরা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীরেন শিকদারসহ ৬৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, ঘটনার দিন তাঁর সামনেই আসামিদের ছোড়া গুলিতে ফরহাদ নিহত হয়েছেন।