বাঁচানো গেল না মাদারীপুরের অ্যাসিডদগ্ধ তরুণীকে

সাদিয়া আক্তার
ছবি: সংগৃহীত

মাদারীপুরের শিবচর উপজেলায় অ্যাসিডে দগ্ধ তরুণী (২০) সাদিয়া আক্তার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। শনিবার বিকেলে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে তিনি মারা যান। প্রথম আলোকে শনিবার রাত নয়টায় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন।

নিহত সাদিয়ার স্বজনেরা বলেন, প্রেমের সম্পর্ক থেকে চার বছর আগে শিবচর উপজেলার মাদবরের চর এলাকার সিরাজ শিকদারের ছেলে সুমন শিকদারের সঙ্গে বিয়ে হয় একই এলাকার লিটু হাওলাদারের মেয়ে সাদিয়া আক্তারের। তাঁদের একটি মেয়ে আছে। কলহের কারণে সাদিয়া সুমনকে তালাক দেন। এরপর সাদিয়ার অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়। এ কথা সুমনের কানে পৌঁছাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। গত ১৬ আগস্ট রাত ১০টার দিকে সুমন লোকজন নিয়ে সাদিয়ার বাবার বাড়িতে যান। সেখানে তাঁকে বাধা দেওয়া হলে সুমন সাবেক স্ত্রী সাদিয়াকে লক্ষ্য করে অ্যাসিড ছুড়ে মারেন।

গুরুতর অবস্থায় সাদিয়াকে প্রথমে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা স্বজনদের জানান, অ্যাসিডে সাদিয়ার মাথা, মুখমণ্ডলসহ শরীরের ২৭ শতাংশ পুড়ে যায় এবং পোড়াস্থানে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনার পরদিন সাদিয়ার বোন তাছলিমা আক্তার বাদী হয়ে শিবচর থানায় সুমনসহ পাঁচজনের নামে অ্যাসিড অপরাধ দমন আইনে (২০০২) একটি মামলা করেন। গা ঢাকা দেন সুমন। ঘটনার ৯ দিনের পর ২৪ আগস্ট তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার মাঝিরঘাট থেকে সুমনকে গ্রেপ্তার করেন মাদারীপুর জেলার গোয়েন্দা পুলিশের সদস্যরা।

আরও পড়ুন

শিবচর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন বলেন, অ্যাসিডে দগ্ধ সাদিয়া আক্তার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাঁর পরিবার পুলিশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ঢাকাতেই সাদিয়ার ময়নাতদন্ত হয়েছে। তাঁর লাশ নিয়ে স্বজনেরা সন্ধ্যার পর শিবচরের গ্রামের বাড়িতে রওনা হয়েছে। রোববার সকালে তাঁর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে। এ ঘটনার মূল আসামিসহ তিনজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।

আরও পড়ুন