নাটোরে সংসদ সদস্যসহ আ.লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ

নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম আজ বেলা সোয়া ১১টার দিকে সদর উপজেলার দীঘাপতিয়া এমকে অনার্স কলেজ কেন্দ্রের সামনে যান
ছবি: প্রথম আলো

জেলা পরিষদ নির্বাচনে নাটোর-২ (সদর-নলডাঙ্গা) আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। নির্বাচনে নাটোর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানসহ প্রায় সব কটিতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা বিজয়ী হয়েছেন।

আজ সোমবার সকাল ৯টায় ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার পর থেকে কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের নেতাদের আনাগোনা ছিল। সকাল ১০টার কিছু পর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম ভোট দিতে আসেন সদরের দীঘাপতিয়া এম কে অনার্স কলেজে। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মী। ভোট দেওয়ার আগে-পরে তিনি ভোটকেন্দ্রের প্রধান ফটকে দীর্ঘ সময় অবস্থান করে ভোটারদের প্রভাবিত করছিলেন এবং ঠেলে ঠেলে ভোটকেন্দ্রে ঢুকিয়ে দিচ্ছিলেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রসঙ্গে শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ভোটার হিসেবে কেন্দ্রে ভোট দিতে ঢুকেছি। পরে আমাদের দলীয় ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে ঢুকে ভোট দেওয়ার অনুরোধ করেছি। এতে আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়নি।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম গাড়িবহর নিয়ে বেলা সোয়া ১১টার দিকে দীঘাপতিয়া এম কে অনার্স কলেজের প্রধান ফটকে আসেন। এ সময় তিনি তাঁর সমর্থক ভোটারদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। পরে প্রশাসনের অনুরোধে কেন্দ্রের অদূরে একটি ঘরে অবস্থান নেন। সেখানে প্রায় তিন ঘণ্টা অবস্থান করার পর তিনি গাড়িবহর নিয়ে আবারও কেন্দ্রের প্রধান ফটকে আসেন। এ সময় তিনি গাড়িতে বসেই কুশল বিনিময় করেন। তাঁকে দেখে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা স্লোগান দেন। এই কেন্দ্রে সকাল থেকেই একটি স্থানীয় পত্রিকার পরিচয়পত্র গলায় ঝুলিয়ে অবস্থান করছিলেন সংসদ সদস্যের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) আকরাম হোসেন।

আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি আচরণবিধি লঙ্ঘন করেননি। তিনি শুধু কেন্দ্রের সামনের সড়ক দিয়ে এক জায়গায় যাচ্ছিলেন। এ সময় কেন্দ্রের বাইরে তাঁর দলীয় নেতা-কর্মীরা দাঁড়িয়ে গেলে তিনি শুধু কুশল বিনিময় করেছেন। ভোট নিয়ে আলোচনা করেননি। তাঁর পিএসের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি একটি পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। এতে কোনো অন্যায় হয়নি।

সিংড়া উপজেলা সদরে গোল-ই-আফরোজ সরকারি কলেজে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিংড়া পৌরসভার মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌস শতাধিক ভোটারকে নিয়ে একযোগে ভোটকেন্দ্রে ঢোকেন। তাঁর নেতৃত্বে ভোটাররা সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে ভোট দেন।

নলডাঙ্গা উপজেলায় পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সম্পাদক মনিরুজ্জামান দুপুর ১২টার দিকে নজমুল হক সরকারি কলেজ কেন্দ্রে তাঁর সমর্থক কাউন্সিলরদের নিয়ে ভোট দেন। কেন্দ্রের সামনে তিনি দলীয় প্রার্থীদের পক্ষে প্রচারণা চালান। সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলামের পিএস আকরাম হোসেন সাংবাদিক পরিচয়ে এই কেন্দ্রেও ঢোকেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা এক যুবক মুঠোফোনে ফেসবুক লাইভ করতে থাকলে প্রশাসনের লোকজন তাঁকে বের করে দেন।

এদিকে নির্বাচনী ফলাফলে আওয়ামী লীগের নেতা সাজেদুর রহমান খান বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।