চাকরিজীবনের শেষ দিনে ফুল দিয়ে সাজানো গাড়িতে চড়িয়ে শিক্ষককে বিদায় সংবর্ধনা

চাকরি জীবনের শেষ দিন ফুল দিয়ে সাজানো পিকাপে নিয়ে গ্রাম ঘুরিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে যশোর সদর উপজেলার বীরনারায়নপুর তের আউলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেনকে (মাঝের জন)
ছবি: সংগৃহীত

চাকরিজীবনের শেষ দিন ফুল দিয়ে সাজানো পিকআপ গাড়িতে বসিয়ে গ্রাম ঘুরিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হলো যশোর সদর উপজেলার বীরনারায়ণপুর তের আউলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেনকে। মঙ্গলবার দুপুরে ব্যতিক্রম এই আয়োজন করেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা।

বিদায় সংবর্ধনা পেয়ে প্রধান শিক্ষক আলতাফ হোসেন আবেগাপ্লুত হয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমার চাকরিজীবনের শেষ দিনে সুন্দর আড়ম্বরের মধ্য দিয়ে বিদায় হওয়াটা ছিল কল্পনাতীত। আজকের এই বর্ণাঢ্য আয়োজন আমার জীবনের অনেক বড় প্রাপ্তি, যা বাকি জীবনটুকু মনে রাখার মতো।’

আলতাফ হোসেন বলেন, ‘১৯৮৯ সালের আগস্ট মাসে স্থানীয় কয়েকজন মিলে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। আমি চেষ্টা করেছি বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ছুটি না নিতে। শিক্ষার্থীদের সব সময় পড়াশোনার প্রতি খেয়াল রেখেছি। ভুল–ত্রুটি হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।’

শিক্ষক আলতাফ হোসেন সদর উপজেলার বীরনারায়ণপুর গ্রামের আজিম উদ্দিনের ছেলে। তিনি ১৯৮৯ সালের আগস্ট মাসে চাকরিতে যোগদান করেন। দাম্পত্য জীবনে স্ত্রী, এক ছেলে ও পাঁচ মেয়েসন্তান রয়েছে তাঁর। তিনি ছিলেন ক্রীড়া সংগঠক ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব। কর্মজীবনে অসংখ্য ছাত্রছাত্রীকে শিক্ষা দিয়েছেন। যাঁরা বিভিন্ন সরকারি–বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ ব্যবসা ও রাজনীতিতে দেশ ও জাতির জন্য অবদান রেখে চলছেন।

বিদায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম শামিম হোসেন। এ ছাড়া বীর নারায়ণপুরসহ কয়েক গ্রামের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা উপস্থিত ছিলেন। পরে বিদায়ী শিক্ষককে বিভিন্ন উপহার প্রদান করেন বিদ্যালয়টির বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসী।

বীরনারায়ণপুর তের আউলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমি আলতাফ হোসেন স্যারের ছাত্র ছিলাম। স্যারকে ছুটি নিতে দেখিনি। অসুস্থ থাকলেও স্যার স্কুলে এসেছেন। স্যারের দেওয়া শিক্ষা নিয়ে আজ আমরা নানাভাবে প্রতিষ্ঠিত। স্যার আমাদের আদর্শ।’