দৈনিক পত্রিকা সমাজের দর্পণ। সংবাদ পরিবেশনায় মান, নিরপেক্ষতা ও পেশাদারির কারণে দীর্ঘদিন ধরে দেশের শীর্ষে আছে প্রথম আলো। উপমহাদেশের মধ্যে শক্তিশালী ও পেশাদার গণমাধ্যমগুলোর মধ্যে প্রথম আলো অন্যতম। দীর্ঘদিন ধরে তারা পাঠকের আস্থা ধরে রেখেছে। প্রথম আলো দেশের স্বার্থে কাজ করুক, এটাই পাঠকদের প্রত্যাশা।
শনিবার বিকেলে ঝালকাঠিতে প্রথম আলোর সুধী সমাবেশে বক্তারা এ কথা বলেন। পত্রিকাটির ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের কাজী খলিলুর রহমান মিলনায়তনে এ সুধী সমাবেশের আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষক, গবেষক, বীর মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবী, সাংবাদিক, নারীনেত্রীসহ বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার প্রতিনিধিরা প্রথম আলোর ভূমিকা, সাংবাদিকতা, নিরপেক্ষতা ও চ্যালেঞ্জ নিয়ে খোলামেলা মতামত ব্যক্ত করেন।
সমাবেশের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর ঝালকাঠি প্রতিনিধি আসম মাহমুদুর রহমান। এতে জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সাকিনা আলম বলেন, এখন পরিবেশের ওপর চাপ অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। সংবাদপত্র হিসেবে প্রথম আলোকে পুনর্ব্যবহৃত (রিসাইক্লিং) কাগজ ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানান। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে এটি গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মনে করেন।
মুক্তিযুদ্ধের তরুণ গবেষক ইসমাইল মুসাফির প্রথম আলোর মুদ্রণের মান ও বিজ্ঞাপনের ভাষায় নতুনত্ব আনায় প্রশংসা করেন। গ্রন্থাগারের উদ্যোক্তা নারায়ণ চন্দ্র মিস্ত্রি বলেন, গুণী মানুষদের নিয়ে প্রথম আলোর ধারাবাহিক প্রতিবেদন করা উচিত।
ঝালকাঠি পৌর বিএনপির সভাপতি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নাসিমুল হাসান বলেন, ‘লিমনের ঘটনায় রাষ্ট্রযন্ত্রের প্রচণ্ড চাপের মুখে আমরা যখন আদালতে লড়ছিলাম, তখন প্রথম আলো নিয়মিত প্রতিবেদন করে লিমনের পক্ষে সত্য তুলে ধরেছিল। শুধু তখনই নয়, জুলাই অভ্যুত্থান–পরবর্তী সময়ে তারা সাহসী প্রতিবেদন করে জাতিকে সঠিক তথ্য দিয়েছে। এই ভূমিকা দেশের স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ।’
জেলা জামায়াতের আমির হাফিজুর রহমান বলেন, সংবাদ পরিবেশনায় মান, নিরপেক্ষতা ও পেশাদারির কারণে প্রথম আলো দীর্ঘদিন ধরে দেশের শীর্ষে আছে। গণমাধ্যমের কাজ হলো সমান দৃষ্টিতে সমাজকে দেখা—এটাই তাদের শক্তি।
ঝালকাঠি প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল আমিন তালুকদার বলেন, জনগণের চাহিদা যেমন বেশি, প্রত্যাশাও তেমন বেশি। এ কারণেই প্রথম আলোকে আরও সতর্ক ও শক্তিশালী হতে হবে।
ঝালকাঠি-১ আসনে জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ফায়জুল হক বলেন, কোনো গণমাধ্যমকে চাপ দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করার প্রবণতা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। গণমাধ্যমকে নিজের কাজ স্বাধীনভাবে করতে দিতে হবে। প্রথম আলো দেশের স্বার্থে কাজ করুক, এটাই তাঁদের প্রত্যাশা।
বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ইমাম পাশা বলেন, ‘দৈনিক পত্রিকা সমাজের দর্পণ। প্রথম আলো দীর্ঘদিন ধরে পাঠকের আস্থা ধরে রেখেছে। আমি নিয়মিত প্রথম আলো পড়ি। আশা করি, তারা ভবিষ্যতে আরও উন্নত সাংবাদিকতা উপহার দেবে।’
সমাবেশে পাঠকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন প্রথম আলোর হেড অব ডিপ নিউজ রাজীব আহমেদ। তিনি বলেন, ‘প্রযুক্তির পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা অনলাইনকে আরও গতিশীল করছি। দ্রুত ও নির্ভরযোগ্য খবর পৌঁছে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য। পাঠকেরাই প্রথম আলোর শক্তি। প্রথম আলো সব সময় পাঠকের মতামতের গুরুত্ব দিয়ে থাকে।’