জয়পুরহাটে নারীদের ফুটবলে বাধা দেওয়ার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগরে বিক্ষোভ
জয়পুরহাটে নারীদের ফুটবল ম্যাচ বন্ধ করতে মাঠে ভাঙচুর ও পরবর্তী সময় ম্যাচটি বাতিল হওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস ক্লাবের আয়োজনে শহীদ মিনার থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি কয়েকটি সড়ক ঘুরে আবার শহীদ মিনারের পাদদেশে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে ইতিহাস বিভাগের ৪৮তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আয়শা সিদ্দিকা বলেন, জয়পুরহাটে নারীদের একটি ফুটবল খেলা হতে দেওয়া হয়নি। আগেও তাঁরা দেখেছেন, নায়িকাদের ঠিকমতো কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। দেশের এই যে পরিস্থিতি নারীদের প্রতি বিভিন্ন মাত্রায় সহিংসতা, তাঁরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত এটা নিয়ে ক্রীড়া উপদেষ্টার কোনো বিবৃতি নেই। অন্যান্য উপদেষ্টাদেরও এসব নিয়ে মাথাব্যথা নেই। নারীদের প্রতি এই যে উগ্রতা, এটা অনতিবিলম্বে বন্ধ করতে হবে এবং রাষ্ট্রকে এর দায়ভার নিতে হবে।
একটা ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠী সব সময় নারীদের ঘরে আবদ্ধ করে রাখতে চায় মন্তব্য করে নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী শরণ এহসান বলেন, নারী খেলোয়াড়েরা দেশকে সাফল্যের চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রেফারি জয়া চাকমা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। এত কিছুর পরও প্রান্তিক পর্যায়ে তাঁরা দেশে নারী খেলোয়াড়দের প্রতি সহিংস আচরণ দেখতে পাচ্ছেন। এই উগ্রবাদ ও মৌলবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে তাঁদের দাবি, জুলাই ও আগস্ট–পরবর্তী সময়ে নারীর প্রতি এই সহিংসতা তাঁরা দেখতে চান না।
জয়পুরহাটের ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত শাস্তির দাবি জানিয়ে গণ-অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আবদুর রশিদ বলেন, ‘জুলাইয়ে গণ-অভ্যুত্থানে আমরা দেখেছি, আমাদের বোনেরা কীভাবে বিপ্লবী ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁরা বাংলাদেশের যেকোনো অন্যায়ে আপসহীন মনোভাব লালন করেছেন। অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের বাংলার বাঘিনীরা কখনো পিছপা হননি। জয়পুরহাটে নারীদের অদমিত করার জন্য যেসব উগ্রবাদী খেলার মাঠে নৃশংস হামলা চালিয়েছেন, তাঁদের অতি দ্রুত চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।’
এর আগে নারীদের ফুটবল ম্যাচ আয়োজনের প্রতিবাদে গত মঙ্গলবার বিকেলে একদল মানুষ মিছিল নিয়ে এসে খেলার মাঠের টিনের বেড়া ভাঙচুর করেন। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সরাসরি সম্প্রচার (লাইভ) করা হয়। পরে নারীদের ফুটবল ম্যাচটি বাতিল করেন আয়োজকেরা।