মুন্সিগঞ্জে উদ্ধার লাশটি ঢাকা থেকে নিখোঁজ হওয়া স্থপতির

লাশ
প্রতীকী ছবি

মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখানে উদ্ধার হওয়া লাশটি ঢাকা থেকে নিখোঁজ হওয়া স্থপতি ইমতিয়াজ মোহাম্মদ ভূঁইয়ার (৪৭) বলে দাবি করেছে তাঁর পরিবার। এর আগে ৮ মার্চ সন্ধ্যায় সিরাজদিখানের মরিচের সেতু এলাকা থেকে অজ্ঞাতপরিচয় হিসেবে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। উদ্ধারের পর দিন আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশটি আঞ্জুমান মুফিদুলে হস্তান্তর করে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার বেওয়ারিশ হিসেবে তাঁর লাশ দাফন করা হয়।

ইমতিয়াজ ঢাকার তেজগাঁও থানার ডমিসাইল এলাকার মোহাম্মদ হোসেন ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বাড়ির নকশার কাজ করতেন। তাঁর স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে। ৭ মার্চ বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি নিখোঁজ হন। এ নিয়ে ৮ মার্চ নিখোঁজের স্ত্রী ফাহামিদা আক্তার কলাবাগান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

ইমতিয়াজের ছোট বোন ফৌজিয়া প্রথম আলোকে বলেন, সিরাজদিখানে উদ্ধার হওয়া লাশটি তাঁর বড় ভাই ইমতিয়াজের। তিনি বলেন, ‘আমার ভাইয়ের সঙ্গে কোনো বিষয় নিয়ে, কারও সঙ্গে কোনো শত্রুতা ছিল না। তিনি খুবই নিরীহ প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। ৭ মার্চ তাঁর বিবাহবার্ষিকী ছিল। সেদিন সন্ধ্যায় ছেলেমেয়েদের সঙ্গে নিয়ে রেস্টুরেন্টে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। একটি নকশা প্রিন্ট করার জন্য সেদিন দুপুরে তিনি বাড়ি থেকে বের হন। এর পর থেকেই নিখোঁজ ছিলেন। আমরা আমাদের আত্মীয়স্বজনসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় ভাইকে খোঁজাখুঁজি করি। কোথাও তাঁকে পাইনি। ভাই নিখোঁজের বিষয় নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশন আমাদের সাক্ষাৎকার নেয়। শুক্রবার টেলিভিশনে সংবাদটি প্রচার করা হয়। সংবাদটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্নভাবে শেয়ার করা হয়। সেখানেই এক ব্যক্তি কমেন্ট করে জানায় সংবাদে প্রচার করা বর্ণনা ও চেহার একটি লাশ সিরাজদিখানে পাওয়া গেছে। আমরা বিষয়টি থানায় জানাই।’

এ ব্যাপারে মুন্সিগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার (টঙ্গিবাড়ী সিরাজদিখান সার্কেল) মোস্তাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘৮ মার্চ সন্ধ্যায় সিরাজদিখানের মরিচা সেতু এলাকা থেকে লাশটি অজ্ঞাতপরিচয়ে উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের পরিচয় না পাওয়ায় ৯ মার্চ আইনি প্রক্রিয়া শেষে লাশটি বেওয়ারিশ হিসেবে ঢাকার আঞ্জুমান মুফিদুলে হস্তান্তর করা হয়। তারা গত বৃহস্পতিবার লাশের দাফন করে। তবে আমরা লাশের ডিএনএ রেখে দিয়েছিলাম। আজ শনিবার তেজগাঁও থানা–পুলিশ আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। ইমতিয়াজের একজন স্বজনও এসেছিলেন। লাশের বিবরণ নিখোঁজ ব্যক্তির সঙ্গে মিলেছে। এ ঘটনার তদন্ত শুরু করা হচ্ছে।’

ইমতিয়াজের বোন ফৌজিয়া কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ভাবি শোকে স্তব্দ হয়ে গেছেন। কারও সঙ্গে কোনো কথা বলছেন না। আমাদের পরিবারের সবার বড় ভাই চলে গেছে। পুরো পরিবারে শোক বইছে। থানায় জিডি করে জীবিত তো দূরে থাক ভাইয়ের লাশের খবরটি আমরা পাইনি। লাশের খবর পেলাম বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করার পর। কোথায় জানি দাফন করা হয়েছে। আমরা তাঁর লাশ উত্তোলনের প্রক্রিয়ার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’