গাজীপুর সিটি করপোরেশনের চান্দনা চৌরাস্তা (পালের মাঠ) এলাকায় ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় ও চাঁদাবাজির অভিযোগে জেলা পুলিশের এক কনস্টেবল ও তাঁর সহযোগীকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছেন এলাকাবাসী।
ঘটনাটি ঘটে গতকাল রোববার দিবাগত রাত সাড়ে নয়টার দিকে। পরে পুলিশ তাঁদের গ্রেপ্তার করে আজ সোমবার সকালে কারাগারে পাঠিয়েছে।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার ছুটুনিয়া গ্রামের জলিল তালুকদারের ছেলে পুলিশের কনস্টেবল মনির হোসেন তালুকদার (২৮)। তিনি প্রেষণে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থায় (এনএসআই) কর্মরত। তাঁর সহযোগীর নাম সজীব সরকার (২৭)। তিনি টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার গড়াসিন গ্রামের রতন সরকারের ছেলে। গাজীপুর জজকোর্টে শিক্ষানবিশ আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, গাজীপুর মহানগরীর চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় গত রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে রিকশা চালাচ্ছিলেন বাচ্চু মন্ডল। রিকশাটি স্থানীয় ওডেসা গার্মেন্টসের সামনে পৌঁছালে জেলা পুলিশের কনস্টেবল ও এনএসআইয়ের সদস্য মনির হোসেন ও তাঁর সহযোগী সজীব সরকার রিকশাটির গতিরোধ করেন। পুলিশ পরিচয় দিয়ে রিকশায় অবৈধ মালামাল রয়েছে বলে চালককে ভয়ভীতি ও চড়থাপ্পড় মারতে থাকেন তাঁরা। পরে মামলার ভয় দেখিয়ে রিকশাচালকের পকেট থেকে ৬১০ টাকা এবং রিকশায় থাকা অপর এক যাত্রীর কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা কেড়ে নেওয়া হয়।
এ সময় ওই রিকশাচালকের ডাকচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন। পরে স্থানীয় লোকজন তাঁদের পিটুনি দিয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের বাসন থানা–পুলিশের কাছে সোপর্দ করেন। পুলিশ উপস্থিত লোকজনের সম্মুখে দেহ তল্লাশি করে মনির হোসেনের প্যান্টের পকেট থেকে ৩ হাজার ও সজীব সরকারের প্যান্টের পকেট থেকে ৬১০ টাকা উদ্ধার করে।
ওই ঘটনায় রিকশাচালক বাচ্চু মিয়া বাদী হয়ে গাজীপুর মেট্রোপলিটনের বাসন থানায় একটি মামলা করেছেন। ওই মামলায় আজ সকালে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে গাজীপুর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মালেক খসরু। তিনি বলেন, কনস্টেবল মনির ও তাঁর সহযোগী সজীব দীর্ঘদিন ধরে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় মানুষদের ভয়ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায় করছিলেন বলে জানা গেছে।
কনস্টেবল মনির হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা ও তাঁকে বরখাস্ত করার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুস সাকিব।