নাটোরে বাবার কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন করপোরাল মাসুদ রানা
সুদানে জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে ড্রোন হামলায় নিহত করপোরাল মাসুদ রানার দাফন রাষ্ট্রীয় ও সামরিক মর্যাদায় সম্পন্ন হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে শায়িত হলেন তিনি।
আজ বেলা আড়াইটার দিকে জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কফিনে করে তাঁর মরদেহ বহনকারী সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার লালপুর উপজেলার বোয়ালিয়াপাড়ায় তাঁর গ্রামের বাড়িসংলগ্ন করিমপুর সরকারি উচ্চবিদ্যালয় মাঠে অবতরণ করে। সেখানে স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে চারপাশ। সেখান থেকে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে মরদেহটি তাঁর বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। দেশের এই বীর সন্তানকে শেষবারের মতো দেখতে সকাল থেকেই বাড়িতে ভিড় জমাতে শুরু করেন মানুষ।
শহীদের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকালে ঢাকা সেনানিবাসে শহীদ মাসুদ রানার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর হেলিকপ্টারে মরদেহ নাটোরে আনা হয়। গ্রামের বাড়িতে কিছু সময় রাখার পর বিকেলে বোয়ালিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর রাষ্ট্রীয় ও সামরিক মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে বাবার কবরের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।
সেনাবাহিনী জানায়, মরদেহ বহনকারী হেলিকপ্টার অবতরণের জন্য অস্থায়ী হেলিপ্যাড নির্মাণসহ দাফনের আনুষঙ্গিক সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করে সেনাবাহিনীর ১১ পদাতিক ডিভিশনের একটি দল।
শহীদ মাসুদ রানা ২০০৬ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। দীর্ঘ ১৯ বছর ধরে তিনি নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন। গত ৭ নভেম্বর স্ত্রী ও আট বছরের একমাত্র মেয়েকে রেখে শান্তি রক্ষা মিশনে যোগ দিতে সুদান যান তিনি। মিশন শুরুর মাত্র এক মাস সাত দিনের মাথায় সন্ত্রাসীদের হামলায় তিনি শাহাদাত বরণ করেন। শান্তিরক্ষী হিসেবে দেশের মুখ উজ্জ্বল করার স্বপ্ন নিয়ে দেশ ছাড়লেও কফিনে করে ফিরেছেন এই বীর।
১৩ ডিসেম্বর সুদানের আবেই এলাকায় জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের একটি ঘাঁটিতে সন্ত্রাসীদের বর্বরোচিত ড্রোন হামলায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ছয়জন শান্তিরক্ষী শহীদ হন। তাঁদেরই একজন করপোরাল মাসুদ রানা।